গােয়েন্দাদের ধারণা,
গােয়ালতােড়ে মাটির তলায়
অস্ত্রভাণ্ডার নেতাইয়ের
হার্মাদ সিপিএমের

0

Last Updated on September 26, 2020 12:46 AM by Khabar365Din

বিশেষ রাজনৈতিক প্রতিবেদন


৩৬৫ দিন। গােয়ালতােড়ের জঙ্গলে উদ্ধার হওয়া বিপুল অস্ত্র ভান্ডার আসলে নেতাই গণহত্যায় সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর ব্যবহার করার লুকোনাে অস্ত্র বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান গােয়েন্দাদের। নেতাইতে গণহত্যা চালিয়ে গরবে ফেরার পথে এই জঙ্গলেই সিপিএমের হার্মাদরা অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে রাজ্য পুলিশের গােয়েন্দারা। মাটির নিচ থেকে এই বিপুল অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধারের পরে প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন অন্তত বছর দশেক এই সমস্ত অস্ত্র মাটির তলায় লুকানাে ছিল। শুধু তাই নয় ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে নেতাই গণহত্যায় সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী সুশান্ত ঘােষের নির্দেশে নিরীহ গ্রামবাসীদের উপরে যে ধরনের বন্দুক দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল, উদ্ধার হওয়া বন্দুকগুলির সঙ্গে তার মিল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার জন্য ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ পুরনাে ফাইল হেঁটে নেতাই গণহত্যার ঘটনায় নিহতের শরীরে যে সমস্ত বুলেট পাওয়া গিয়েছিল, এই সমস্ত বন্দুক ব্যবহার করে ছড়া হয়েছিল কিনা জানার চেষ্টা করছে। ভৌগােলিকভাবে গােয়ালতােড়ের উখলার জঙ্গলে যেখানে এই বিপুল অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার হয়েছে তা থেকে নেতাই এবং নেতাই গণ হত্যার ঘটনায় গড়বেতা থেকে সুশান্ত ঘােষের নির্দেশে হার্মাদ বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়েছিল, তাদের পালানাের পথে পড়ে এই জঙ্গল। গড়বেতা এবং নেতাই থেকে এই জঙ্গলের দূরত্ব বড়জোর আধঘন্টা। সেই সময় জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের মােকাবিলায় সুশান্ত ঘােষের নেতৃত্বে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীকে নিয়ে ছত্তিশগড়ের সালওয়া জুড়ুমের স্টাইলে বানানাে হয়েছিল হার্মাদ শিবির। নেতাইতে সিপিএম নেতা রথীন দন্ডপাটের বাড়িতেও একইভাবে হার্মাদ শিবির গড়ে তুলেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সিপিএম নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ের সিপিএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ির ছাদ থেকে নিরীহ গ্রামবাসীদের উপরে নির্বিচারে গুলি চালায় রাজ্যের তকালীন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘােষের তৈরি হার্মাদ বাহিনী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত ৯ জনের। পরে সিআইডি এবং সিবিআই তদন্ত উঠে আসে গুলিচালনার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল সিপিএমের জেলা কমিটির অন্তত ১৯ জন প্রভাবশালী নেতা ও নেত্রী। উপস্থিত ছিল সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুজ পান্ডে, ডালিম পান্ডে, জয়দেব গিরি, ফুল্লরা মন্ডল, চণ্ডী করণ। সুশান্ত ঘােষ নিজে ঘটনাস্থলে থাকার প্রত্যক্ষ কোন প্রমাণ না পাওয়া গেলেও গােটা ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিল তার দুই ঘনিষ্ঠ সাগরেদ তথা জেলা সিপিএমের প্রভাবশালী নেতা তপন দে ও শুকুর আলী। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই যখন জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদী আতঙ্কের প্রচার চালানাে হচ্ছে বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণােদিতভাবে, তখনই একদা মাওবাদী অধ্যষিত পশ্চিম মেদিনীপুরের গােয়ালতোেড় এর জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হলাে বিপুল অস্ত্র ভান্ডার। জঙ্গলের প্রতিটি এলাকায় তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালানাের সময় গােপন সূত্রে খবর পেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গােয়ালতােড় থানার পুলিশ গােয়ালতােড় থানার উখলার জঙ্গলে বিশেষ ধরনের যন্ত্র দিয়ে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে আগ্নেয়াস্ত্রর অস্তিত্ব খুঁজে পায় জেলা পুলিশ। ৩০ টি বন্দুক উদ্ধারের পাশাপাশি উখলার জঙ্গল থেকে ল্যান্ডমাইন তৈরির সরঞ্জামও উদ্ধার করেছে,উদ্ধার করেছে প্রচুর টিফিনকৌটো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here