Last Updated on December 23, 2021 8:40 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে মুম্বাই পালানো নিশ্চিন্দার কর্মকার বাড়ির ২ বউ প্রেমিক সহ ধরা পড়ল আসানসোল স্টেশনে। তাদের সঙ্গে পুলিশের জালে ২ প্রেমিক রাজমিস্ত্রির সঙ্গে উদ্ধার ৭ বছরের শিশু পুত্রও। কিন্তু এরই সঙ্গে প্রশ্ন উঠল দেশের শীর্ষ আদালত যখন পরকীয়া অপরাধ নয় বলে জানিয়েছে তখন কেন এই ২ জন সাবালক রাজমিস্ত্রীকে গ্রেফতার করা হল। এই ২ বিরুদ্ধে জনের মানব পাচার,অপহরন যে অভিযোগ পুলিশ এনেছে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। হাওড়া পুলিশ সূত্রে খবর, আগেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন ২ রাজমিস্ত্রি প্রেমিকের সঙ্গে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছেন হাওড়া নিশ্চিন্দার আনন্দ নগরের বাসিন্দা কর্মকার বাড়ির দুই গৃহবধূ সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন ওই বাড়ির এক নাতিকে। মঙ্গলবার পুলিশের কাছে খবর আসে মুম্বাই থেকে ফের বাংলায় ফিরছে একজন। তাদের হাতে টাক্স শেষ হয়ে গেছিল বলে এখান থেকে আবার টাকা নিয়ে মুম্বাই ফেরার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আসানসোল থেকে তারা ট্রেন পরিবর্তন করতে পারে এই খবর পেয়ে সেই মতো মঙ্গলবার রাত থেকে স্টেশনে ফাঁদ পাতে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। একইসঙ্গে বিষয়টি জানানো হয় আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট একইসঙ্গে আসানসোল স্টেশনে রেল পুলিশকেও সতর্ক করা হয়। অবশেষে বুধবার ভোরে ফাঁদে ধরা পড়ে ২ গৃহবধূ ও তাদের প্রেমিকরা। ট্রেন পরিবর্তন করে আসানসোল স্টেশন এর নামতেই জনকে গ্রেপ্তার করা হয় ২ রাজমিস্ত্রীকে, উদ্ধার করা হয় ২ বধূ সহ ৭ বছরের শিশুকে।
পুলিশ সূত্রের দাবি জেরায় চারজন জানিয়েছে, শ্রীরামপুর যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে তারা সোজা মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় কিন্তু সেখানে পৌছানোর পর প্রবল আর্থিক সমস্যায় পড়ে তারা টাকার যোগাড় করতে চারজনে ঠিক করে ফের রাজ্যে ফিরবে তারা সেখান থেকে টাকা জোগাড় করে ফের মুম্বাই পাড়ি দেবে। কিন্তু হাওড়া স্টেশনে নামলে ধরা পড়ার ভয়ে আছে তাই এই পরিকল্পনা মতোই প্রথমে আসানসোল এবং সেখান থেকে ট্রেন বদলে অন্যত্র যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেল নিশ্চিন্দা দুই গৃহবধূ এবং তাদের প্রেমিক। পুলিশের একটি সূত্রের খবর ৪ জন এটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে তারা প্রত্যেকে সুস্থ আছে শিশুটিরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে তারও কোনো শারীরিক সমস্যা ধরা পড়েনি। নিশ্চিন্দার কর্মকার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এই গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পুরুষদের অধিকারকর্মী নন্দিতা ভট্টাচার্য। ‘ এত জানাই কথা একই অপরাধে পুরুষদের গ্রেফতার করা হবে মহিলাদের নয়। অনিয়ন্ত্রিত ও লিঙ্গ বৈষম্যহীন আইন না হলে মহিলা ক্ষমতায়ন সংসার নামক প্রথারই মৃত্যু ঘন্টা বাজিয়ে দিচ্ছে এই ঘটনা তারই প্রমান।’ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শীর্ষ আদালতের ৫ সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ অর্থাৎ পরকীয়া অপরাধ নয়| তবে এটি ডিভোর্স এর অন্যতম কারন হতেই পারে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল সিআরপিসি ১৯৮(১)/(২) অসংবিধানিক ও তার ফলে স্বামী তার স্ত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা করতে পারবে না। তাহলে প্রশ্ন ৪ প্রেমিক, প্রেমিকার মধ্যে মানবপাচার, অপহরন কিভাবে হতে পারে। এবিষয়ে পুলিশের আধিকারিকরা কিছু বলতে রাজি হননি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১২টা নাগাদ শীতের পোশাক কেনাকাটা করতে বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকে আর সন্ধান মেলেনি ২ বধূর ও সাত বছরের ছেলে । এরপরই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করে কর্মকার পরিবার। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ নিখোঁজদের কল লিস্টের সূত্র ধরেই এই সাফল্য পেয়েছে।