Last Updated on August 11, 2021 10:51 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। ১৮৯৩ সালের সেপ্টেম্বর আমেরিকার শিকাগো বিশ্ব ধর্ম সংসদে স্বামী বিবেকানন্দের পরে আবার এক বাঙালিকে বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে আহ্বান জানানো হলো। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে রোমে আয়োজিত হতে চলেছে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন। সেখানেই বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষ করে ইউরোপীয়দের কাছে মানবতা এবং বিশ্বশান্তির জন্য কাজ করে স্বীকৃতি আদায় করে নেওয়ার ক্ষেত্রে মাদার টেরিজার পরেই থাকলেন মমতা। ৬ ও ৭ অক্টোবর রোমে ২ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পোপ ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলকেও। এর পাশাপাশি আমন্ত্রণপত্রে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের জন্যেও মমতাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে। মিশরের ইমাম আহমেদ আল তায়িবও রয়েছেন আমন্ত্রিতদের তালিকায়। গোটা বিশ্বের প্রায় পাঁচশো জন জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা এবং ধর্মগুরুরা এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন বলে সংগঠনের আমন্ত্রণ পত্রে জানানো হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়ে গিয়েছে।

রোমে পিপলস অ্যাজ ব্রাদার্স, ফিউচার আর্থ – শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কমিউনিটি অফ সান্ট এগিদিও নামক এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ১৯৮৭ সাল থেকেই বিশ্ব জুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করে তারা৷ ইউরোপ এবং ভূমধ্যসাগরীয় বিভিন্ন দেশে অতীতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে৷ মূলত গৃহহীন, অসুস্থ এবং গরিব মানুষের জন্যই কাজ করে এই সংগঠন৷ উদ্যোক্তাদের তরফেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল, পোপ ফ্রান্সিস সহ ইতালির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালেও ইতালির বাণিজ্যমন্ত্রক এবং একাধিক বণিকসভার আমন্ত্রণে রোম সফরে গিয়েছিলেন মমতা। সেবারেই মাদার টেরেসাকে সন্ত ঘোষণার সময়ে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়ে তিনি গিয়েছিলেন ভ্যাটিকান সিটিতেও। মমতাকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে গরিব এবং সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের জন্য তাঁর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন উদ্যোক্তারা৷ পাশাপাশি নির্বাচনে বড় জয়ের জন্যও মমতাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে৷ আমন্ত্রপত্রে সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর মার্কো ইমপ্যাগলিয়াজো লিখেছেন, গত দশ বছর ধরে একটানা সামাজিক ন্যায়বিচার, দেশের উন্নতি এবং শান্তির জন্য কাজের জন্য এবং নির্বাচনে জয় পাওয়ায় আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন৷

তিনি তাঁদের সংগঠন সম্পর্কে সংক্ষেপে জানান যে সামাজিক ন্যায়, বিশ্ব শান্তি, সৌভ্রাতৃত্ববোধ, দুঃস্থদের সাহায্য ও অসহায়দের হয়ে কাজ করে কমিউনিটি অফ সান্ট এগিদিও সংগঠন। এই সংগঠনের সব কর্মীই স্বেচ্ছাসেবী, যাঁরা সামাজিক ন্য়ায় ও দুঃস্থদের জন্য কয়েক দশক ধরে লড়াই করে চলেছেন। আটের দশকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে কমিউনিটি অফ সান্ট এগিদিও-র পিপল অ্যান্ড রিলিজিয়ান বিভাগে বিশ্বের সব ধর্মগুরু এবং ক্রিশ্চান চার্চের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা সভার আয়োজন করে। তার সঙ্গেই সংযুক্ত হন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। পৃথিবী জোড়া ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠাই তাঁদের সার্বিক উদ্দেশ্য।