Last Updated on May 20, 2023 8:17 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন।গৌতম লাহিড়ী। ওনার মতো জনপ্রিয় নেতা নাকি নেই। সহযোগীকে ‘চাণক্য’ বলা হয়। এহেন জুটির কণটিকে কেবলমাত্র ভরাডুবি হয়েছে সেটাই একমাত্র সত্য নয়। হিন্দু হৃদয়সম্রাট হওয়া সত্ত্বেও ত্রিশ টির বেশি আসনে জামানত খুইয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম দল ভাজপা। আরো অবাক হওয়ার পালা। নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীর নেতৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো সংঘ থেকে বিজেপিতে। আরো বড় চমক। যে কংগ্রেস ২০১৯ সালে ২৮ টি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটি পেয়েছিল, এবার বিধানসভার ফলের ভিত্তিতে ২১ টিতে এগিয়ে। বিজেপি পেয়েছিল ২৫ টি আসন। এবারের নিরিখে মাত্র ৫। এটা ঠিকই বিধানসভার ভোটের ফলেরভিত্তিতে লোকসভার ভোট তুলনা করা যায় না। কিন্তু ভোটারদের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে। কণটিকে জাত-পাত নির্বিশেষে জনতা বিজেপির বিরূদ্ধে ভোট দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, ২০১১ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধির ‘সব চোরেদের নাম মোদী হয়। কেন,’ বলার জন্য লোকসভা সাংসদ পদ খারিজ হলো। সেই কোলার কেন্দ্রে এবার বিধানসভার ভোটের ফলে কংগ্রেস তো জিতেছে বটেই কিন্তু দ্বিতীয় স্তানে বিজেপি নয়। বিজেপি প্রার্থী তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে। বিজেপি দলের মধ্যে নয়া মন্থন সুরূ হয়েছিল কণটিক নির্বাচন চলাকালীন। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী েেকাণঠাসা ইয়েদুরাপ্পা বলতে শুরু করেছিলেন, ‘হিজাব-লাভ জিহাদ, মসজিদে আজান নিষিদ্ধ করা ইস্যু হতে পারে না। আমাদের ইস্যু উন্নয়ন।
ভোটে পরাজিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই বলেছিলেন,” জানি না কার মাথা থেকে হিন্দুত্বের ইস্যু নিয়ে প্রচার করার রণনীতি তৈরি হলো? আমরা তো কেন্দ্রিয় ও রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচী নিয়েই প্রচার করতে চেয়েছিলাম। মাথা তো একজনেরই। নাম না করে হতাশা ব্যকতো করলেন কি পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী? প্রায় মধ্যরাতে বহুবার গণনার পর বাঙ্গালোরের জয়নগর আসনে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে। জয়ের পর স্বাভাবিক ভাবেই খুশি। বিজেপির যুব মোর্চার তরুণ নেতা কট্টরবাদী তেজস্বী সূর্য সাংবাদিকদের বললেন, “ আমরা কর্ণটিকে হেরেছি। বিধানসভায়। দেখবেন লোকসভায় ২৮ টার মধ্যে ২৮ টাতেই জিতবো। “পরমুহুর্তে সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল কার নেতৃত্বে লড়বেন আপনারা? চমকে দেওয়ার মতো জবাব এলো- ‘এটা পরে দলের সিনিয়ার নেতারা বসে ঠিক করবেন।” মানে? মোদী কি নেতা নন? সকলেই তো জানেন ওনার নাকি বিকল্প নেই। তাহলে এমন উকতি সন্দেহ তৈরি করছে না?
রাজধানী দিল্লির জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সংঘ ঘনিষ্ট সিনিয়ার সাংবাদিকদের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এঁরা সকলেই সিরিয়াস সাংবাদিক। লিখছেন- মোদী যাদু ফিকে হয়ে যাচেছ। একই অস্ত্র বারবার ব্যবহার করলে তার ধার থাকে না। ‘ একটা কণটিকে পরাজয়ের পরেই যদি এমন ভাবনা প্রকা শিত হয়, তাহলে এখনও তো চার রাজ্যের বিধানসভা ভোট বাকি আছে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা। মিজোরাম কে বাদ দিলাম। এই সব রাজ্যের মধ্যে কংগ্রেস যদি বেশিরভাগ রাজ্যে জয়ী হয়, তাহলে? তাহলে কি সংঘ ও বিজেপির মধ্যে মোদী বিরোধি জেহাদ বাড়বে না তো? তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে বিজেপি। নিশ্চিত মোদীও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন। যেমন নিজের কতৃত্ব দেখানোর জন্য সুপ্রীম কোর্টের রায়কে অকেজো করতে অর্ডিন্যান্স নিয়ে এলেন। সুপ্রীম কোর্ট বলেছিল- নির্বাচিত সরকারের অধিকার রয়েছে অফিসার পোস্টিংং ও বদলির । লেফট্যানেন্ট গভর্ণরের নয়।। মোদী মানতে নারাজ। সুপ্রীম কোর্টের সংগে সংঘাতের রাস্তায় গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছে না তো?
পুনশ্চ-নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো নির্বাচনী কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোটের ১৬.৭ শতাংশ ভোট না পেলে নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া দশ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হবে। এটাই জামানত বাজেয়াপ্ত। কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটের সেই সব কেন্দ্রে হিসাব নিচে যেখানে বিজেপির জামানত গিয়েছে। সুত্র- নির্বাচন কমিশন কৃষ্ণরাজানগরা(ভোট -১.২৪), হোলেনারারাশিপুর(২.৬২), হুনসুর (৩.১১), শ্রাবণবেলাগোলা(৩.২৩) শ্রীনিবাসপুর ( ৩.৪৮), আরশিকেরে (৩.৫১), মেলুকোটে(৩.৫২),নাগামঙ্গলা (৪.০৪), পাওয়াগাড়া (৪.৩) পিরিয়া পাটনা(৪.৪৬),গেরীবিদানুর (৪.৫), মুলবাগান (৫.১৯)বঙ্গারাপেট( ৫.৪৬)রামানগরম(৭.৭)পুলরেশিনগর(৮.১২), সিলাঘাট্টা (৮.৭১) গুরমিতকাল(৮.৯১),মদুগিরি (৯.৩৭) মা গারি (৯.৯৭) এরপর আরো এগারোটি আসন। যেখানে গড়ে দশ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি।