Last Updated on April 18, 2023 6:43 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। বাবার দিল্লিযাত্রার পিছনে বড় কোনও টাকার খেলা হয়েছে। আমাকে না জানিয়েই ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি গেছেন বাবা। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, বাবা সুস্থ নয়। তিনি টিকিট কীভাবে কাটলেন? টাকা কীভাবে এল? তা কিন্তু আমার কাছে অজানা। এখানে বড় কোন টাকার খেলা হয়েছে। আমার ধারণা বাবাকে কোন এজেন্সি দিল্লিতে বসে কিডন্যাপ করিয়েছে নোংরা রাজনৈতিক খেলার জন্য। গতরাতে কলকাতা থেকে মুকুল রায়ের রহস্যজনক অন্তর্ধান প্রসঙ্গে এভাবেই গভীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা তুলে ধরলেন মুকুল রায়ের ছেলে তথা প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়।
অভিষেকের বদনাম করতেই কিডন্যাপ মুকুল
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করার জন্য রাজনীতি করা হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারবেন না। মুকুল রায় মানসিক ভাবে সুস্থ নয়। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করে মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায় বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত, অভিষেককে হেয় প্রতিপন্ন করতেই কোনও একটি রাজনৈতিক দল খেলায় নেমেছে। কারণ এখন নিশানা অভিষেক। তিনিই দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।বয়সে ও আমার ছোটো হলেও ও আমার লিডার।
দিল্লিতে মুকুল
গতকাল সন্ধ্যে বেলা থেকে বাড়ির লোকেদের কাছে কার্যত নিখোঁজ থাকার পরে গভীর রাতে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায় দিল্লি বিমানবন্দরে পরিচিত কোন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছেন মুকুল রায়। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ একটি বিমানে দিল্লি রওনা হন তিনি। তাঁর নামে একটি বোর্ডিং পাসও ভাইরাল হয়েছে। ইন্ডিগোর বিমানে মুকুলের টিকিটের নম্বর ছিল ৬ ই ৮৯৮। কিন্তু তারপর দিল্লি গিয়ে কোথায় মুকুল রায়, তা নিয়ে ধোঁয়াশা। পরিবারের সদস্যরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ছেলে শুভ্রাংশু। ইতিমধ্যেই গতূ রাতে এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শুভ্রাংশু। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে মুকুলকে নিয়ে যান দুই ব্যক্তি। মাঝেমধ্যেই তাঁদের সঙ্গে নাকি বেরোতেন মুকুল রায়। সোমবার মুকুল রায়কে নিয়ে যান ওই দুজন। তারপর থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের সঙ্গেই কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন মুকুল রায়। মুকুলের সঙ্গেই বিমানের টিকিট কাটা হয়েছে ভগীরথ মন্ডল এবং রাজু মাহাতো নামে আরো দুই ব্যক্তির নামে। এছাড়া দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় এক ব্যক্তি মুকুলের পা ছুঁয়ে প্রণাম করার পাশাপাশি তাকে রিসিভ করে বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কথা বলেন। দুজনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে স্পষ্ট ওই ব্যক্তি মুকুল রায়ের পূর্ব পরিচিত। শুধু তাই নয় পূর্বপরিকল্পনামাফিক ওই ব্যক্তি যে তাকে এয়ারপোর্টের রিসিভ করতে এসেছেন এবং বাইরে নির্দিষ্ট কোন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য গাড়ি অপেক্ষা করছে তার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মুকুল রায় হেঁটে হেঁটে যাচ্ছেন। একজনের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল রায় বলছেন, দিল্লিতে দরকারে এসেছি আমি। এমনি কাজেই এসেছি। দিল্লির এমপি ছিলাম আমি, তা দিল্লি আসবো না? দিল্লিতে বিশেষ কোনো কারণে আসিনি। আর আগেও আমি দিল্লি এসেছি। যতদিন দরকার হয় দিল্লিতে থাকবো।
মানসিকভাবে স্থিতিশীল নন মুকুল রায়
দিল্লিতে বসে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে মোটা অংকের টাকার খেলায় মুকুল রায় কে কলকাতা থেকে কিডন্যাপ করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করার পাশাপাশি মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়ের অভিযোগ, বাবা মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। ২০১১ সালের মুকুল রায় ও ২০২৩ সালের মুকুল রায়ের মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে। বাবা ইনসুলিন নেন, সেটা নিচ্ছেন কিনা জানি না। দিনে ১৮টা করে ওষুধ খান, সেটার কী হচ্ছে তাও জানা নেই। আমার সঙ্গে তো বাবার কোনও কথাও হয়নি। একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। বাবাকে এয়ারপোর্ট থেকে ফেরাতে চেষ্টা করেছিলাম। সিআইএসএফ কোনওরকম সাহায্য করেনি। বাবার দিল্লিযাত্রার পিছনে বড় কোনও টাকার খেলা হয়েছে। আমাকে না জানিয়েই ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি গেছেন বাবা। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, বাবা সুস্থ নয়। কাল মুখ্যমন্ত্রী নিজে ২ বার বাবার খবর নিয়েছেন। একজন সুস্থ মানুষের বিজেপিতে যোগদান আর অসুস্থ মানুষের বিজেপিতে যোগদানে পার্থক্য আছে।
বাবা টাকা পেলেন কোথা থেকে?
এরপর আরও বিস্ফোরক দাবি করে শুভ্রাংশু রায় বলেন, কাল কোনও এজেন্সি একটি ছেলের মাধ্যমে বাবার হাতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাবার এখন মাসিক আয় ২১ হাজার টাকা। সুতরাং তাঁর দিল্লি যাওয়া ও সঙ্গীদের খরচ বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। একজন অসুস্থ মানুষকে কোনওদলে যোগদান করাতেই পারে। ২০২১ সালেও মুকুল রায় বিজেপিতে ছিলেন, তাতে তৃণমূলের কোনও ফারাক পড়েনি। বাবার ফোনের সুইচ অফ, কেউ ফোন নিয়ে নিয়েছে কিনা জানি না। তিনি টিকিট কীভাবে কাটলেন? টাকা কীভাবে এল? তা কিন্তু আমার কাছে অজানা।