Last Updated on July 10, 2023 7:22 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি। কোন স্কুলের নামের আগে পিএম শ্রী কথাটি জুড়লে তবেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করা যাবে। না হলে মিলবে না কেন্দ্রীয় সাহায্যের এক নয়া পয়সাও। যদিও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর গুনগান গাওয়ার জন্য পিএম শ্রী কথাটি জুড়তে হলেও খরচের ৪০ শতাংশ বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেই। কেন্দ্রের মোদি সরকারের এমন অদ্ভুত ফতোয়ার বিরুদ্ধে এবারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এই প্রকল্প নিজেদের রাজ্যে চালুক করবে না বলে জানিয়ে দিল বাংলা সহ দেশের ৬ রাজ্য।
ভারতের সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে শিক্ষা কেন্দ্র এবং রাজ্যের যৌথ তালিকাভূক্ত বিষয়। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার এর আমলে বারে বারে ভারতীয় সংবিধানে উল্লেখিত দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক কাঠামোর মূল বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে চলেছে মোদি সরকার। তা সে সাম্প্রত িক এনসিআরটি সিলেবাস থেকে মুঘল ইতিহাস থেকে শুরু করে ডারউইনবাদ বাদ দেওয়া বা রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে দেওয়ার মত ঘটনা হোক না কেন। অথচ সংবিধানে যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ব্যয় বরাদ্দের বিষয়টি নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে সেই হিসেবে মেনে রাজ্য সরকারের কোষাগারের উপরেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ খরচের ভার চাপিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর বিরোধিতাতেই সরব হয়েছে বাংলা বিহার ওড়িশা সহ মোট ছয় রাজ্য।
কি এই পিএমশ্রী স্কুল
২০২২ সালে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন ভারত জুড়ে ১৪৫০০ পিএম শ্রী স্কুল স্থাপন করা হবে। বর্তমান স্কুলগুলিকে প্রধানমন্ত্রী স্কুল ফর রাইজিং ইন্ডিয়া যোজনার অধীনে উন্নত ও উন্নত করা হবে। যে স্কুলগুলিকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দেবের ৬০ শতাংশ আর্থিক সহায়তা এবং ৪০ শতাংশ দেবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার।
কোন কোন রাজ্য বিরোধিতা করেছে
রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে টাকা নেওয়া হবে অথচ কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর জয়গান গাইতে হবে স্কুলের নামের আগে পিএম শ্রী বসিয়ে – এমন অদ্ভুত শর্ত মানতে চায়নি দেশের ছয় রাজ্য। বাংলার পাশাপাশি পিএম শ্রী প্রকল্প নিজেদের রাজ্যে চালু করবে না বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে আম আদমি পার্টি শাসিত রাজধানী দিল্লি, ডি এম কে শাসিত তামিলনাড়ু, জনতা দল ইউনাইটেড ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল শাসিত বিহার, সিপিআইএম শাসিত কেরল এবং বিজু জনতা দল শাসিত ওড়িশা। ভাজপা বিরোধী এই রাজ্য গুলির সরকারের প্রশ্ন, রাজ্যকে যদি ৪০ শতাংশ অর্থ বহন করতে হয় তাহলে কেন প্রধানমন্ত্রী কথাটি প্রকল্পে থাকবে? স্কুলের নামেই বা কেন পিএম-শ্রী লেখা হবে। তাদের বক্তব্য, স্কুলের নামের সঙ্গে এলাকার ইতিহাস, আবেগ যুক্ত থাকে। শুধুমাত্র আর্থিক কিছু অনুদানের জন্য এলাকার বাসিন্দাদের আঘাত করলে বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ঠিক একই কারণে আবাস যোজনার আগে প্রধানমন্ত্রী কথাটি জুড়তে অস্বীকার করে নিজেদের রাজ্যের নাম বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা এবং ওড়িশা।