Last Updated on September 5, 2023 7:04 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যেভাবে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে সম্পূর্ণ অবহেলা করে রাজভবনের সিদ্ধান্ত মেনে চলার নির্দেশিকা জারি করেছেন তার সর্বাত্মকভাবে বিরোধিতা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ধনধান্যে স্টেডিয়াম থেকে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলিকে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী যা বললেন,
১. এখন এখানে (বাংলায়) বসে আছেন একজন মাননীয় রাজ্যপাল। ইনি নাকি বোস, বাংলার বোস নয় কেরালার বোস। তিনি বলছেন আমি স্কুল দেখব আমি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় দেখব। আমরা বলছি আইন মেনে চলুন। কেন রাজভবন থেকে দুটো বিজ্ঞপ্তি করা হল? প্রতিদিন রাজভবন থেকে একে ওকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। ওনাকে আবার বলছি, এটা করবেন না। টাকা দেব আমরা, পলিসি করব আমরা আর আপনি খবরদারি করবেন! মধ্যরাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পরিবর্তন হয়ে গেল। কেরল থেকে প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে নিয়ে এসে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সেনসিটিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে দিল। রবীন্দ্রভারতীতে করে দিয়েছে প্রাক্তন জাজকে। শুভ্রকমল, ওকে আমি চিনি ও আমার সঙ্গে এমএ পড়েছে। সে তো অধ্যাপনা করেনি কোনদিন। গোটা সিস্টেমকে কোলাপ্স করার চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত আমরা মানব না। যদি রাজ্যপাল মনে করেন তিনি সব করবেন, নির্বাচিত সরকারের কোন দরকার নেই, তাহলে বলি আমরা ইলেক্টেড, আর আপনি নমিনেটেড পোস্ট, শুধু দেখানোর জন্য। পলিসি ঠিক করবে রাজ্য সরকার, আপনি নন। আপনি যদি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করেন আর যদি বিশ্ববিদ্যালয় গুলি যদি আপনার কথা শুনে চলে আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। টিট ফর ট্যাট। কোন কম্প্রোমাইজ নয়, দেখি আপনি কোন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাইনে দেন।
২. আপনারা শিক্ষক শিক্ষিকারাই আমাদের শিক্ষাগুরু। আজকে গুরুজন চলে এসেছে কারা, যারা বাংলাকে চেনে না। আজকে বাইরে থেকে প্রফেসর অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিয়ে আসে। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। আমরা আপনার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করছি। আপনি একটা বিলও ফেরত পাঠাচ্ছেন না সব আটকে রেখে দিচ্ছেন। নিজের মতো লোক ডেকে এনে প্রাক্তন ডিজিকে সেরিমনিয়াল রিসেপশন দিচ্ছেন। আমি ব্রাত্য মনীশ সবাইকে বলব, আমাদের এই লড়াইটা লড়তে হবে খুব ভালোভাবে। যদি কেউ অধিকার কেড়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে আঘাত করে তাহলে আমি বাধ্য হব রাজভবনের সামনে ধর্না দিতে। আমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভাঙতে দেব না। আমরা আইনের পথে যাব।
৩. অন্যায় অত্যাচার মানব না। জোর করে রাখা যাবে না বাংলা শিক্ষা আন্দোলনের ঢেউ। বাংলাকে আঘাত করলে বাংলা প্রত্যাঘাত করতে জানে। সুস্থ বাঘের চেয়ে আহত বাঘ আরো ভয়ংকর। আমাকে দাবানো খুব অসুবিধার। আজ আঘাত করছেন, প্রত্যাঘাত করলে সহ্য করতে পারবেন তো? অপেক্ষা করুন। আপনি দরকার হলে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে পড়াশুনা করুন আগে ছাত্র হোন পড়াশোনা করুন তারপর বাংলা নিয়ে কথা বলবেন। দুলাইন বাংলা মুখস্ত করলেই বাংলা শেখা হয়ে যায় না। অত সোজা নয় ভাষাটা। বাংলাকে নিয়ে এই অকারণ খেলা চলবে না।
৪. চ্যালেঞ্জ করলে সামনাসামনি চ্যালেঞ্জ করুন তা না হলে দয়া করে সরে দাঁড়ান। বাংলাকে অবজ্ঞা করবেন না। ইললিগ্যাল অথরাইজড পারসন।
৫. প্রাক্তন উপাচার্যরা আপনারা সবাই থাকবেন, কার কী করার আছে দেখছি।সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার প্রিন্সিপাল প্রাক্তন উপাচার্যদের নিয়ে মিটিং করো ব্রাত্য (ব্রাত্য বসু) তোমরা। আজ চার পাঁচ পাঁচ ধরে একই জিনিস চলছে। বিধানসভা পর্যন্ত ডাকতে দেয় না। কোথা থেকে মাতব্বরেরা চলে এসেছে। আপনি রাজভবনে বসে আছেন তার টাকাও আমরা দিই। কেরল থেকে ট্রেনে ভাড়া করে লোক নিয়ে আসেন, সেই টাকাটাও আমাদের মানে জনগণের।
৬. কেউ ভয় পাবেন না। উনি এপয়েন্টমেন্ট দেবেন, টাকা দিতে পারবেন না। কেউ কেউ ভাবছে যে চলে যাই মাইনে যদি না পাই। আরে যাবেন না, আমরা সব খবর রাখি।
৭. ভারতের নাম পরিবর্তন করে দিচ্ছে আমি শুনলাম। রাষ্ট্রপতির নামে যে কার্ড হয়েছে টি-টোয়েন্টি সামিটে, সেখানে লাঞ্চ বা ডিনারে, তাতে লেখা আছে ভারত বলে। ভারত তো আমরাও বলি। এতে নতুনত্বের কি আছে? ইংরেজিতে বলি ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ার নাম সারা বিশ্ব চেনে। হঠাৎ কি হল আজ দেশের নামও পরিবর্তন হয়ে যাবে। কবে রবি ঠাকুরের নাম বদলে দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব নাম পরিবর্তন করে দিচ্ছে। বড় বড় ঐতিহাসিক সৌধের নাম বদলে দিচ্ছে। ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে। বলে দিচ্ছে শিক্ষা দফতর রাজ্য সরকারের হাতে থাকবে না।
৯. আজকে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড করেছি। তারা শিক্ষায় ঋণ নিতে পারেন। আমি ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করব তারা যেন টাকাটা তাড়াতাড়ি ক্লিয়ার করে দেন।