JU: ছাত্র হত্যার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ফাঁস, কি ঘটেছিল ৯ আগস্ট রাতে? মৃতপ্রায় ছাত্র যখন মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে অংশুমান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গেট বন্ধের নির্দেশ দেয়

0

Last Updated on September 28, 2023 12:23 PM by Khabar365Din

৩৬৫দিন। ৯ আগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলে ঠিক কি ঘটেছিল? অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ৯ আগস্ট ভোর রাতে কেপিসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি স্থানীয় যাদবপুর থানাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, সে কথাও স্পষ্ট তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে।

ভোর ৫.৫৬ মিনিটে অংশুমানের নির্দেশ গেট বন্ধ থাকবে
তথ্যপ্রমাণ লোপাটের পেছনে অংশুমান মন্ডল নামে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টের ২১নম্বর পাতায়। কেপিসি হাসপাতালে ভোর পাঁচটা ১৫ মিনিট নাগাদ প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হওয়ার পর ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে ‘এ টু হোস্টেল অল থার্ড ইয়ার ‘ নামে ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি মেসেজ লেখে ১০৮ নম্বর রুমের আবাসিক অংশুমান মন্ডল। মেসেজে অংশুমান বলে, ‘এখুনি হস্টেলের গেট বন্ধ কর, যাতে কোনো পুলিশ অথবা মিডিয়ার লোক হস্টেলে ঢুকতে না পারে। ‘ পরে সকাল ৬:১৫ মিনিট নাগাদ ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সত্যব্রত রায় হস্টেলের গেট বন্ধ রয়েছে কিনা তা নিজে গিয়ে দেখে আসে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অংশুমান মন্ডলের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। রিপোর্টের ৩৭ পাতায় শাস্তির সুপারিসে অংশুমানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে এফ এই করার কথাও বলা হয়েছে। রাতে হোস্টেলের মেন গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই নিরাপত্তারক্ষী যোগেন্দ্র শাহ ও জয়ন্ত কুমার পালকে কমিটির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা নির্দিষ্টভাবে হোস্টেলের কোন পড়ুয়াকে চিহ্নিত করতে পারেনি যে গেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল তাদের। এদিকে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত হিমাংশু কর্মকার বর্তমানে যে জেলফাজতে রয়েছে। সেই হিমাংশু কর্মকার এ টু ব্লকের বিল্ডিং এর সামনের থেকে ওই ছাত্রের দেহ অচৈতন্য অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার জন্য ক্রাইম সিনে জল ঢালার নির্দেশ দিয়েছিল। যা রিপোর্টের ১৯ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মধ্যরাত থেকে পরের দিন সকাল ৯ টা পর্যন্ত বারবার জিবি মিটিং করা হয় অ্যালিবাই সাজাতে

তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ১৯ নম্বর পাতায় বলা হয়েছে, ৯ আগস্ট রাত ১২ টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০ আগস্ট সকাল ৯ পর্যন্ত দফায় দফায় জিবি মিটিং করে অভিযুক্ত ছাত্ররা। ধৃত সৌরভ চৌধুরী, সত্যব্রত রায়, দীপশেখর দত্ত ছাড়াও দীপক মন্ডল, রনি হক, শান্তিময় তন্তুবে , তারিখ রেজওয়ান খান চৌধুরী সহ অন্যান্য সিনিয়র হোস্টেলের আবাসিকরা বারবার জিবি মিটিং করে ঘটনার ন্যারেটিভ কি হবে তা ঠিক করে দেয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ, মিডিয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কি বলবে তার অ্যালিবাই সাজিয়ে দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যদের সামনে ফেটসুর সদস্যরাও ঘটনার একই ন্যারেটিভ তুলে ধরে।

প্রাক্তনী সৈকত সিট তদন্তের অভিমুখ ঘোরানোর চেষ্টা করে
৯ আগস্ট রাতে কিভাবে মৃত্যু হলো বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রর ? তার তদন্ত করতেন নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি সৈকত সিটে নামে প্রাক্তন এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। যদিও তদন্ত কমিটির রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে ওই প্রাক্তনী ঘটনার তথ্য চেপে রেখে তদন্তের গতি মক পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। সঠিকভাবে তদন্তে সহযোগিতাও করেনি। এমনকি ওই ছাত্র ঘটনাস্থলে হাজির না থাকলেও ফোনের মাধ্যমে সমস্ত নির্দেশ দিতে থাকে।