Last Updated on December 20, 2020 1:06 AM by Khabar365Din
চরম মাত্রাতিরিক্ত উচ্চাশা
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দিবাস্বপ্নে
■■
অমিত শাহ’র সঙ্গে যােগাযোেগ
বিজেপির বাংলায় তৎকালীন অবজার্ভার
সিদ্ধার্থনাথ সিং’এর মাধ্যমে
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
৩৬৫ দিন। মেদিনীপুরের অমিত শাহের মঞ্চে উঠে পায়ে হাত দিয়ে পরম বৈষ্ণব সেজে থাকা শুভেন্দু অধিকারীর প্রণামের ঘটা দেখে মনে হচ্ছিল বুঝি এই প্রথম তাকে প্রণামের সুযােগ পেলেন। কিন্তু মুখ খুলতেই জানা গেল অন্তত বছর ছয়েক আগে থেকে অমিত শাহের দর্শন পেতে অভ্যস্ত তিনি। দলের মধ্যে থেকেই দলনেত্রী এবং দলীয় নেতৃত্বের বিশ্বাসের সুযােগ নিয়ে গত প্রায় ৬ বছর ধরেই তৃণমূলের ভিতরে অন্তর্ঘাতে লিপ্ত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই শুধুমাত্র দলবদল করে বিজেপিতে যােগ দেওয়ার জন্যই নয়, দীর্ঘকাল ধরে দলীয় নেতৃত্ব এবং কর্মীদের পাশাপাশি বাংলার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে গদ্দার বলছে তৃণমূল।তৃণমূলের এই অভিযােগ যে বিন্দুমাত্র মিথ্যে নয়, আজ মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে অমিত শাহের মঞ্চে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়ে সে কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়ে শুভেন্দু বলেন, অমিত জি তখন পার্টির অল ইন্ডিয়া জেনারেল সেক্রেটারি। পূর্ব উত্তর প্রদেশের দায়িত্বে থেকে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলকে জিতিয়েছেন। উত্তর প্রদেশে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন, তখন অশােক রােডের পুরনাে পার্টি অফিসের সামনে একটা ছােট্ট ঘরে অমিতজি আমাকে দর্শন দিয়েছিলেন। আর সেই দর্শনের সুযােগ করে দিয়েছিলেন এখন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিনহা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ৬ বছর ধরে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তথা সর্বোচ্চ কোর কমিটির সদস্য হয়ে শুভেন্দু যে বিজেপির ডাবল এজেন্ট হিসেবে অন্তর্ঘাত করেছিলেন, গত লােকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দুর পারফরম্যান্স গ্রাফ তা প্রমাণ দেয়।গত লােকসভা নির্বাচনের সময় যেমন মালদহে দলের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দুকে। প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে দলের প্রচার কর্মসূচী ঠিক করার দায়িত্ব ছিল তাঁর। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে উত্তর এবং দক্ষিণ মালদা লােকসভা আসনে অপ্রত্যাশিতভাবে বিপুল ভােটে জিতে যায় বিজেপি। লােকসভা নির্বাচনের সময় শুভেন্দুর দায়িত্বে থাকা ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার প্রত্যেকটি আসনে প্রার্থী বাছাই এবং দলের সামগ্রিক নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব জোর করেই নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন তিনি। মমতাও দীর্ঘদিনের বিশ্বাসে ভর করে শুভেন্দুর ওপরে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে ছিলেন। কিন্তু প্রত্যেকটি লােকসভা আসনে বিজেপি জয়ী হয়। এরপরে পরম বৈষ্ণব শুভেন্দুর অন্তর্ঘাত দলের কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার পরে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতেই মরিয়া হয়ে ওঠেন শুভেন্দু। সেই থেকেই দলকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাতে সফল না হয় বাধ্য হয়েই প্রকাশ্যে যােগ দিতে হলাে বিজেপিতে।