Last Updated on April 6, 2023 7:23 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। কখনও জলপাইগুড়ি, কখনও শিলিগুড়ি, কখনও আবার কোচবিহার, মালদা কিংবা আলিপুরদুয়ার – উত্তরবঙ্গ জুড়ে আচমকা বেড়েই চলেছে হাতির দাপাদাপি। প্রাণহানি সম্পত্তিহানি, দুই-ই হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে বুনো হাতি যে নেই বা ছিল না বা কখনও তারা লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি করেনি এমন নয় কিন্তু গত কয়েকমাসে যে ভাবে অস্বাভাবিক হারে হাতির সংখ্যা বাড়ছে তাতে পড়শি দুই দেশ এবং এক রাজ্যের হাত রয়েছে বলে মনে করছে বনদফতর। কৌশলে হাতি খেদানোর নামে তা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে হাতি জনিত প্রবল সমস্যায় পড়ছে এ রাজ্য।
কী ভাবে হাতির অনুপ্রবেশ ?
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ প্রসঙ্গে যা জানিয়েছেন তা রীতিমত চমকে দেবার মত। মন্ত্রীর বক্তব্য পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল, ভুটান, ঝাড়খণ্ড থেকে একটি কায়দায় হাতির পাল ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলায়। বিশেষ পথে হাতি পাচার করে তা বাংলায় ঢুকিয়ে দিয়েই যাতে সেই হাতির দল আর ফিরে যেতে না পারে সেজন্য তাদের সীমানায় খাল কেটে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ফেরার রাস্তা। ফলে সেই হাতির পাল পাকাপাকিভাবে আস্তানা গাড়ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে। এই সব জঙ্গলে আগে থেকেই পর্যাপ্ত হাতি থাকায় অতিরিক্ত এই সব ভিন দেশী বা ভিন রাজ্যের হাতির জায়গা হচ্ছে না, খাবারের সংকট দেখা যাচ্ছে ফলে তারা লোকালয়ে চলে আসছে। ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
পরিবেশ প্রেমীদের তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে শেষ সুমারী হয়েছিল কোভিডের আগে। সেসময় উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা ছিল ৬০০। পরিবেশে প্রেমী সংগঠন ন্যাফের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা অনিমেষ বসু জানান কোভিডের পর আর শুনানি হয়নি। বিভিন্ন সময়তে করা পর্যবেক্ষণ থেকে পরিষ্কার বিগত বছর গুলির তুলনায় এ বছর সংখ্যাটা অনেকটাই বেড়েছে। কারন হাতির দলগুলির সঙ্গে প্রচুর ছোট হাতি শাবক নজরে আসছে। তার দাবি হাতি ও মানব হাতির সংঘাত মেটাতে সচেতনতার কাজের সুবাদে যে তথ্য আমাদের হাতে এসেছে সে অনুযায়ী কার্শিয়াং ও জলপাইগুড়ি ডিভিশনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় হাতি হামলার ঘটনা চলতি বছরে ঘটেছে।
সতর্ক বনদফতর
বনদফতর সতর্ক থাকায় এবং রাজ্যের মানুষেরা অত্যন্ত সহনশীল ফলে হাতি হামলা করলেও পাল্টা হামলা বা আঘাত হানার ঘটনা কখনো ঘটেনি। হাতি হামলার মুখে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। তবে একটিও হাতির ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেনি। ১৫-২০কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দে বক্সায় তৈরি করা হচ্ছে হাতির আশ্রয় স্থল। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি হাতে হামলার ঘটনা উত্তরবঙ্গে পরপর সামনে এসেছে। মন্ত্রী কথায় হামলাকারী এই দাতালদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে তাদের পরিচর্যা করা হবে। সে ভাবনা নিয়ে বক্সায় একটি হাতির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে করিডোর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। সেখানে হাতিদের পর্যাপ্ত খাদ্য ভান্ডার, খাল কেটে পানীয় জল সংস্থান সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা থাকবে। তাদের পরিচর্যায় থাকবেন প্রশিক্ষিত বনকর্মীরা।