Last Updated on March 14, 2022 11:50 PM by Khabar365Din
টুম্পা সোনার পরে আবার সত্যজিৎ!
টুম্পা সোনা (Tumpa Sona) সংস্কৃতি থেকে এবার সত্যজিৎ রায়কে (Satyajit Ray) পাকড়েছে সিপিএম (CPIM) । সিপিএম এর টুম্পা সংস্কৃতি সুপার ফ্লপ হওয়ায় এবার সত্যজিৎ এ ভর করেছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া সিপিএম।সত্যজিৎ শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়ার পাক্কা এক বছর বাদে হাস্যকরভাবে তাঁর শতবর্ষ কমিটি গড়ে উদযাপনে মন দিয়েছে সিপিএম। সত্যজিৎ হিট তাই টুম্পা ফেলে সত্যজিৎ আঁকড়ে ধরছে তারা। সিপিএমের নির্দেশে রাতারাতি সত্যজিৎ শতবর্ষ পালন করতে নেমে পড়েছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী , কমলেশ্বর মুখপাধ্যায়রা। রাতারাতি এক বায়বীয় সংস্থাও গড়ে ফেলেছেন রায় বাড়ির অজান্তে। গত এক দশক ধরে বাংলার বুক থেকে মুছতে মুছতে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া সিপিএম এবার বাংলার সংস্কৃতি রক্ষায় সেই সত্যজিৎকেই আঁকড়ে ধরছে।
বেছে বেছে সিপিএম বুদ্ধিজীবী
রাতারাতি জন্ম নিয়েছে সত্যজিৎ রায় জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি। রাতারাতি সত্যজিৎ প্রেম জাগ্রত হয়েছে। আলিমুদ্দিনের নির্দেশে ঘুম থেকে জেগে উঠেছে সিপিএম। বেছে বেছে বাম অর্থাৎ সিপিএম বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে কমিটি। তরুণ মজুমদার থেকে পবিত্র সরকার , শুভঙ্কর চক্রবর্তী, মালিনী ভট্টাচার্য, বাসুদেব বর্মন থেকে অনীক দত্ত,পরাণ বন্ধ্যপাধ্যায়, বিপ্লব চট্টপাধায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত।

রায় পরিবারকে অন্ধকারে
কমিটিতে হাস্যকর এই বায়বীয় কমিটিতে নেই রায় পরিবারের কেউ। তাঁর জানেন না আদৌ এমন কিছু হচ্ছে বলে। এমনকি তাঁদের অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে।রবিবার প্রেস বৈঠকের পরেই পরিস্কার হয়ে যায় এই ‘অন্তর্জালীয়’ দেহটির পিছনে রয়েছে বাম ও সিপিএম নেতৃত্বরাই । তবে নিজেদের লজ্জা ঘেন্নার গন্ডি টপকে না গিয়ে বা সত্যজিৎ এর মতো ব্যক্তিত্ব নিয়ে খেলার সাহস সামনে থেকে না দেখতে পেরেই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে নিজেদের সত্যজিৎ প্রেমী বলে আসরে নেমে পড়েছেন এরা ।
খোঁজা হবে সত্যজিতের উত্তরসূরী
এদিনের প্রেস বৈঠকের পর অবশ্য নির্দেশক ( সিপিএম) কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন এই সংগঠন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তৈরী হয়েছে । তাদের সত্যজিৎ কে প্রথম কাজ হচ্ছে ১৫ মার্চ ২০২২ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত ৪ টি বিভাগে প্রতিযোগিতা । সভাপতি সব্যসাচী চক্রবর্তীর কথায় সংস্থার কাজ সত্যজিৎ এর ভাবধারার উত্তরসূরি খোঁজা । কথাটার মানে কি, উপস্থিত অনেকেই বোঝেননি। সত্যজিতের উত্যরসূরী কে খুঁজবেন পবিত্র সরকার, শুভঙ্কর চক্রবর্তী নাকি মালিনী ভট্টাচার্য?
সিপিএমের নির্দেশেই ময়দানে সব্যসাচী, কমলেশ্বর
তাহলে হটাৎ এই সত্যজিৎ প্রেম কেন? সত্যজিৎ জীবিত থাকাকালীন কোনওদিনও তাঁকে সন্মান জানানোর কথা মাথায় আসেনি। জাস্ট মুখ রক্ষার জন্য এই কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে সত্যজিতের নায়িকা মাধবী চট্টপাধ্যায় ও সাবিত্রী চট্টপাধ্যায়কে। সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করে আসা কোনও কৃতী সহকর্মীদেরও ডাকা হয়নি। রাতারাতি তৈরি হওয়া এই কমিটি সম্পর্কে এই কমিটিতে জায়গা পাওয়া অনেকেই কিছু জানেন না। কেন সত্যজিৎ জন্ম শতবর্ষ উদযাপন কমিটি হল? কি বা এদের কাজ? কেনই বা এরা কাজ করবেন? কিভাবেই বা কাজ করবেন, কি বা করবেন, কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়। সব থেকে অবাক বিষয় হল সত্যজিতের জন্ম শতবর্ষ পার হয়ে গিয়েছে পাক্কা এক বছর আগে। তারপর হটাৎ এই সিপিএম বোধোদয়। সিপিএম এর একাংশের মতে টুম্পা সোনা কালচার থেকে বেরোতে চাইছে বঅলিমুদ্দিন। ভ্রান্ত সংস্কৃতির পিছনে ছুটে এমনিই মধ্যবিত্ত বাঙালিদের থেকে দূরে সরে গিয়েছে সিপিএম। তাই মরিয়া হয়ে সিপিএম সত্যজিৎকে আঁকড়ে ধরতে মাঠে নেমেছে। কমিটির অধিকাংশ শিল্পীরাই জানেন না এই কমিটি কবে থেকে কাজ করবে,শতবর্ষ কবে শুরু কবে শেষ কেউ জানেনা। সব্যসাচী ও কমলেশ্বর এই দুই সিপিএম অভিনেতাকে নামিয়ে দিয়েছে তারা। সব্যসাচী ও কমলেশ্বর ময়দানে নেমে পড়েছেন। মালিনী ভট্টাচার্য, অঞ্জন বেরার মত সিপিএম নেতারা এই কমিটি চালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারাই এই কমিটি রাতারাতি তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কোনও স্থায়ী অফিস, ঠিকানা, ওয়েব সাইট ছাড়াই রাতারাতি এই কমিটি সত্যজিৎ শতবর্ষ উদযাপন শুরু করে দিয়েছে। ২ রা মে ‘র পর এই সংস্থা কিভাবে চলবে, তা জানাতে গিয়ে যারা আয়োজক তাকে একবার একে, একবার ওকে জিজ্ঞেস করুন বলে প্রশ্ন এড়িয়েছেন । তবে ওই প্রেস বৈঠকে বাম থুড়ি সিপিএম মুখের ছড়াছড়িতে উপস্থিত ছিলেন বাম আমলের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী অঞ্জন বেরাও।