মমতার আক্রমন-আঞ্চলিক দলেরা কং এর সঙ্গে চলতে পারে না, অখিলেশরা প্রথম দফায় ৫৭ এর মধ্যে ৩৭ পাবে

0

Last Updated on February 15, 2022 12:15 AM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের ৪০ আসনে ভালই ফল করবে তৃণমূল। সোমবার এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, আমরা শুরুয়াত করেছি। আমাদের ভাল ফলই হবে, খারাপ হবে না। ‌গোয়ার প্রত্যেকটি বাড়িতে তৃণমূলের নাম পৌঁছে গিয়েছে। মমতার কথায়,

১. একটা কাজ করতে গেলে তিন চার বছর সময় লাগে, একটা প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে গেলে খানিকটা সময় লাগে। তিন মাস পর, এত ক্ষুদ্র সময়ের মধ্যেও, যেভাবে তৃণমূলের নেতৃত্ব পরে থেকে (গোয়ায়) কাজ করেছে, অভিষেক, মহুয়া, ডেরেক সকলে মিলে, এবং আমাদের এখান থেকেও অনেকে গেছে। ‌তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। ‌নির্বাচন কী হবে সেটা মানুষ ঠিক করবে, ওখানকার নির্বাচন একটু আলাদা প্রকৃতির, আমাদের বাংলার মত নয়। ওখানে গুড় একটু বেশি, ওখানে কেনাবেচা হয়। জিতে যাওয়ার পরেও আগেরবার কংগ্রেস সরকার গঠন করতে পারেনি, সবকটা পালিয়ে গিয়েছিল। আমাদের টিম ভাল কাজ করেছে, এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নামটা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে, এটা বড় সাফল্য। আজকে গোয়াতে যেকোনো বাড়িতে যান, তৃণমূল নামটা জানে। এবার হয়তো আমরা শুরুয়াত করব, আমাদের ভাল হবে, খারাপ হবে না। তিন মাসে যা হওয়া সম্ভব নয়, তা হবে।


২. উত্তর প্রদেশের প্রথম দফার নির্বাচনে ৫৭ আসনে ৩৭ পাবে অখিলেশ। সংসদে আমরা প্রতিদ্বন্দিতা করব
সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করা থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর যোগী আদিত্যনাথের বহিরাগত তত্ত্বের কড়া সমালোচনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন,
আমি অখিলেশের সমর্থনে গিয়েছিলাম। সব কমিউনিটি কাস্ট এক হয়ে গেছে। আমি তো ওখানে প্রতিদ্বন্দিতা করিনি, যোগীতো এখানে কনটেস্ট করে প্রচার করতে এসেছিল। আমি বৃহত্তর স্বার্থে প্রতিদ্বন্দিতা করিনি, গেছি তার কারণ মানুষ বাঁচানোর জন্য। উত্তরপ্রদেশ বাঁচলে, দেশ বাঁচবে। ২০২৪ এ যদি নরেন্দ্র মোদিকে পরাস্ত করতে হয়, তাহলে উত্তর প্রদেশের মত বড় রাজ্য ম্যাটার করবে, বাংলা ম্যাটার করবে। অখিলেশকে আমি বলেছি, সংসদ নির্বাচনে কয়েকটা সিটে আমরা লড়ব। কিন্তু এই নির্বাচনে আমি একটা সিটেও প্রতিদ্বন্দিতা করিনি, কারণ আমি চাইনা, অখিলেশ দুর্বল হোক। ওখানে, ওয়ান ইস টু ওয়ান লড়াই হচ্ছে। প্রথম দফার নির্বাচন হয়ে গেছে, আমি গেস করতে পারি, ৫৭টা সিটের মধ্যে ৩৭টা অখিলেশ পাবে। আমি দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে আবার যাব। ৩ মার্চ বেনারসে যাব।

৩. উত্তরপ্রদেশের মানুষ বিচার চাইছে, ও যোগী নয় আসলে ভোগী তিনি (যোগী আদিত্যনাথ) ভীত, কতটা সন্ত্রস্ত, এই যোগী নিজেকে যোগী বলে, আসলে তো যোগী নয়। আসলে তো ভোগী। ওখানে বেটি পড়াও বেটি বাঁচাও এর নামে, মেয়েদের জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজকে কৃষকরা আন্দোলন করছে, গাড়ি চালিয়ে দিচ্ছে! গাড়ি চালিয়ে দিয়ে মন্ত্রীর ছেলে গিয়ে মার্ডার করে দিচ্ছে। কৃষক হত্যা করছে। কি বিচার পেয়েছে উত্তর প্রদেশের মানুষ।

৪.ওদের (কংগ্রেস) সঙ্গে রিজিওনাল পার্টির কোন ভাব নেই। ওরা ওদের মত চলবে আমরা আমাদের মত

ওরা ওদের মত চলবে, আমরা আমাদের মতো চলব। ওদের (কংগ্রেস) সঙ্গে কোন রিজিওনাল পার্টি গুলির কোন ভাব নেই। ‌শুধু সরকারে আছে বলে বাধ্য হয়ে থাকতে। প্রতিমুহূর্তে ভয়, কখন চলে যাবে, কখন চলে যাবে। আমার সঙ্গে স্ট্যালিনের কথা হয়েছে। ‌ আমার সঙ্গে পরশুদিন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর (কে সি আর) এর কথা হয়েছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোটা ভালো হোক। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে কীভাবে বুলডোজ করা হচ্ছে, এবং সংবিধানকে পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে। তার জন্য এক জায়গায় আসা দরকার। আমি সিপিএমকেও একসাথে কাজ করতে, কংগ্রেসকেও বলেছিলাম। কিন্তু কেউ যদি না চায়, তাদের আপনি কী করবেন। আমাদের দিক থেকে কারোর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কোনো উষ্মা নেই।

৫.বিজেপি কখনো সিপিএমকে ভোট দেয়, সিপিএম কখনো বিজেপিকে ভোট দেয়
বামের ভোট ভাজপায়, আবার রামের ভোট বামেদের ঝুলিতে গিয়ে থাকে, বামরাম এবং কংগ্রেস জোটের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‌মমতা বলেন,
কখনো বিজেপি সিপিএমকে ভোটটা দিয়ে দেয়, কখনো সিপিএম বিজেপিকে ভোটটা দিয়ে দেয়। কখনো আবার বিজেপি কংগ্রেসকে ভোট টা দিয়ে দেয়, কখনো আবার কংগ্রেস-বিজেপিকে ভোটটা দিয়ে দেয়। জগাই মাধাই গদাই, এই থিওরির ওদের একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম ভোটটা তুলে দিয়েছিল বিজেপিকে। কংগ্রেসও তাই করেছিল। লোকসভা নির্বাচনে তাই করেছিল। আর কেউ না, কেউতো দ্বিতীয় বা তৃতীয় হবেই। আমি আমাদের টা নিয়ে মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাই। সিপিএম 34 বছর ক্ষমতায় ছিল কিচ্ছু করেনি। আগামী দিনে আমাদের গন্তব্য শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। জেলায় জেলায় শিল্পায়ন হোক, তার কারণ জেলার ছেলেমেয়েরা চান্স পেলে তাহলেই তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।

৬.উত্তরবঙ্গের জন্য কোনো কাজ করেনি ওরা। শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে
মানুষের ভোটে, মানুষ রায় দিয়েছে। উত্তরবঙ্গে পার্লামেন্ট নির্বাচনেও ওরা অনেক সিটে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু মানুষের জন্য কিছু কাজ করেনি। চা বাগান খোলার কথা ছিল, আজ পর্যন্ত খোলেনি, না করেছে দার্জিলিং এর জন্য কাজ, না করেছে শিলিগুড়ির জন্য কাজ। গোটা উত্তরবঙ্গের জন্যই কোনো কাজ করেনি ওরা (কেন্দ্রীয় সরকার)। শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের যা উন্নয়ন সব আমরা করেছি। আমি আমার দল আমরা সকলে মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। এবারের ভোটে কোথাও কোন গণ্ডগোল হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। আমি নিজে বারবার নির্দেশ দিয়েছি এবং প্রশাসনও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করিয়েছে, তার জন্য আমি তাদেরকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। যেকোনো জয় আমাদের আরও বেশি নম্র, আরো বেশি কর্ম সৃষ্টি করতে, আরো বেশি এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে যেন আমাদের সাহায্য করে।

৭. প্ররোচনায় পা দেবেন না
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কোনো রকম কোনো প্ররোচনায় পা না দিয়ে, শান্তিপূর্ণভাবে এই জয় পালন করতে বলা হচ্ছে। একটাই স্লোগান থাকবে, তৃণমূল কংগ্রেস সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। শান্তির পক্ষে কাজ করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here