Last Updated on August 14, 2023 6:26 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবশেষে বসতে চলেছে সিসি ক্যামেরা। অর্থাৎ দীর্ঘকাল ধরে যাদবপুর ক্যাম্পাসের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে লালদুর্গ বলে যে মুক্তাঞ্চল বানিয়ে রেখেছিল, সেই মুক্তাঞ্চল অবশেষে আসতে চলেছে সিসিটিভির নজরদারিতে। যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ইতিমধ্যেই প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা ঘোষণা করায় রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী অধ্যাপক এবং তাদের ঘনিষ্ঠ বামপন্থী ছাত্র নেতারা। কারণ, এর আগে তখনই ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর চেষ্টা হয়েছে, তার বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং বামপন্থী অধ্যাপক সংগঠন জুটার সদস্য একাধিক অধ্যাপক।
এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তী দুদিন আগে বলেন, যে কোনও প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি থাকা বাধ্যতামূলক। সেখানে বাইরের লোক আসতে পারে। এমনকী রাতেও পাঁচিল টপকে লোক ঢুকত। তারা অন্যায় করলে সেই দোষ গিয়ে পড়বে যাদবপুরের পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের উপর। তাই শনাক্ত করা জরুরি কারা অন্যায় করেছে। সেটা কারোর উপর নজরদারির জন্য না। আমি নিজে সিসিটিভি ক্যামেরার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম। বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামরা লাগানো হয়েছিল। হস্টেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ পথে ছিল সিসিটিভি। কর্তৃপক্ষের উচিত যত দ্রুত সম্ভব সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো। প্রসঙ্গত, যাদবপুরের মূল ক্যাম্পাস বা হস্টেলের সামনে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। কেবলমাত্র কয়েকটি ডিপার্টমেন্টে যেখানে দামি কিছু যন্ত্র আছে, সেখানে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হস্টেলের মতো জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকবে।
জোড়া জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে
শুধুমাত্র ইউজিসি নয়, কলকাতা হাইকোর্টেও দায়ের হয়েছে জোড়া জনস্বার্থ মামলা। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দায়ের হওয়া এই দুই মামলাতেই শুনানির আবেদন মঞ্জুর করেছেন প্রধান বিচারপতি। শুধু তাই নয় এখানে যে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে দুটির বিষয়বস্তু ভিন্ন হলেও তার ফলাফল হিসেবে ছাত্র নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসাতে হবে।
কি রয়েছে জোড়া জনস্বার্থ মামলায়
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর রহস্যজনক মৃত্যু বা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি দিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ৷ এখানে একত্রে দুটি আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ আবেদনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আর কে রাঘবন কমিটি রিপোর্টকে৷
প্রথম আবেদনে বলা হয়েছে, আর কে রাঘবন কমিটি রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের র্যাগিং নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক ইউজিসি। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্ট কমিশন৷ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে৷ জনস্বার্থ মামলার দ্বিতীয় আবেদনে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নেতৃত্বে রাজ্যে অ্যান্টি র্যাগিং সেল গঠন করার কথা জানিয়েছেন আবেদনকারী। তাঁর মতে, এই সেল র্যাগিং সংক্রান্ত যাবতীয় ঘটনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে।