Last Updated on September 18, 2023 1:21 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। আবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মানিত বাংলা তথা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কলকাতা তথা বাংলার দুর্গা পূজোকে আগেই আন্তর্জাতিক স্তরে সাংস্কৃতিক হেরিটেজের শিরোপা দিয়েছিল ইউনেস্কো। এবারে আন্তর্জাতিক হেরিটেজ তালিকায় জায়গা করে নিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। আজ ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করে জানানো হয়েছে
ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে বাংলা তথা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পীঠস্থান শান্তিনিকেতনকে।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নিরিখে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বিশ্বের একমাত্র সমকালীন ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হল শান্তিনিকেতনকে।
বিশ্বের বিভিন্ন স্থান, যার সাংস্কৃতিক-প্রাকৃতিক ঐতিহ্য গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে সমাদৃত হয়, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পায় সেইসমস্ত জায়গা। ২০২১ সালে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের উপদেষ্টা সংস্থা ইসিওএমওএসের এক প্রতিনিধি দল এসেছিল শান্তিনিকেতনে।বিশ্বভারতীও ঘুরে দেখেছিলেন তাঁরা। তারপরেই ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় শান্তিনিকেতনকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন সেই প্রতিনিধি দল। সৌদি আরবের রিয়াধে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠক চলছে। ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে বৈঠক, চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেখানেই শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হল। আজ টুইটারে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকায় নয়া সংযোজন – শান্তিনিকেতন। ভারতকে অভিনন্দন।
কি জানিয়েছে ইউনেস্কো
শান্তিনিকেতনকে কেন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হলো সেই বিষয়ে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠকে পেশ হওয়া বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ১৯০১ সালে পৃথিবী বিখ্যাত কবি এবং দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি করেছিলেন আবাসিক স্কুল শান্তিনিকেতন। এই স্কুল মূলত প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য এবং গোটা পৃথিবীর মানুষের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ভাবধারার মেলবন্ধন ঘটানোর দূর-দৃষ্টি নিয়ে তৈরি হয়েছিল। ১৯২১ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠা করেন একটা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, গোটা পৃথিবীর মানুষ এবং মানবিকতার মেলবন্ধন ঘটাতে কবিগুরু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়েছিলেন বিশ্বভারতী। বিংশ শতাব্দীর একেবারে প্রথম দিকে যখন ভারত সহ পৃথিবীর একটা বড় অংশ জুড়ে ব্রিটিশ শাসনের পাশাপাশি ঔপনিবেশিকতা সমকালীন সভ্যতাকে গ্রাস করেছিল সেই সময় স্বাতন্ত্র্যের সঙ্গে ইউরোপীয় আধুনিকতাকে সযত্নে দূরে সরিয়ে এশীয় আধুনিক ভাবধারার সঙ্গে প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি সমকালীন লোকসংস্কৃতির এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শুভেচ্ছা মমতার
ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন কে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পরে বার্সেলোনা থেকে মমতা টুইট করেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত যে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর শান্তিনিকেতন এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিশ্ববাংলার গর্ব, শান্তিনিকেতনকে লালন করেছেন কবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম একে সমর্থন করে গিয়েছেন বাংলার মানুষ। জয় বাংলা, গুরুদেবকে প্রণাম।