Last Updated on April 24, 2023 7:41 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি। কোন টিভি চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে বসে আদালতে বিচারাধীন কোন বিষয় বক্তব্য রাখা বিচারপতির কাজের মধ্যে পড়ে না। কোন বিচারপতি এমন কাজ করতে পারেন না। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সত্যিই এমন কাজ করেছেন কিনা কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল এর মাধ্যমে শুক্রবারের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে সুপ্রিমকোর্টকে জানানো হোক। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের লিখিত জবাবদিহি তলব করে জানালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এর পাশাপাশি কোন মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে না থাকা সত্ত্বেও যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন সেই প্রসঙ্গে দেশের প্রধান বিচারপতি আজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, কোন টিভি চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে বসে বিচারাধীন বিষয় মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করা অথবা সেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে মামলায় জড়ানোর বিষয়ে আগাম দাবি করা কোন বিচারপতির পক্ষে সাজেনা। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যদি টিভি চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে বসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মামলায় জড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে থাকেন তাহলে সেই মামলা শোনার অধিকার হারাতে পারেন তিনি।
কোন মামলার প্রেক্ষিতে
কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কার্যত নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও হিসেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য অনুমতি দেন দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও সিবিআইকে। জাস্টিস গাঙ্গুলীর এই নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিসন বেঞ্চে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি জানান বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভি। বিষয়টি জানার পরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় প্রথমেই জাস্টিস গাঙ্গুলীর নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার পাশাপাশি জানিয়ে দেন কোন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এখনই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না।
যদিও আশ্চর্যজনকভাবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই স্থগিতাদেশ জারি করার মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই সিবিআই এর পক্ষ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তারপরের দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হাজিরার নোটিশ দেওয়া হয়। অভিষেকের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর পরে সিবিআই কার্যত ভুল স্বীকার করে নেয়।
হাইকোর্টে বিরোধিতা করেছিল রাজ্য
গতবছর অর্থাৎ 2022 সালের অক্টোবর মাসে কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলে রাজনৈতিক বিভিন্ন বক্তব্যের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন বিষয় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে নিষেধাজারীর আবেদন জানিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলা শুনানিতে রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় জানান, এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের সম্মানের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। ১৯৯৭ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও গাইড লাইন অনুযায়ী এবং ফুল কোর্ট মিটিং-এ এই সিদ্ধান্ত রয়েছে। এখানে শুধুমাত্র একজন বিচারপতির সম্মানই জড়িত রয়েছে তা নয়, তাঁর সঙ্গে গোটা প্রতিষ্ঠানের সম্মানের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। ২০১৮ সালে ৪ জন বিচারপতি প্রেস কনফারেন্স করেছিলেন। কিন্তু এখানে একজন বিচারপতি একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। যা নিয়ম বিরুদ্ধ। তার কোনও রাজনৈতিক এবং ভবিষ্যতে বিচার্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বা বিচারাধীন এমন কোনও বিষয়ে বক্তব্য রাখা উচিত নয়। একজন বিচারপতির বক্তব্যই তাঁর নির্দেশ, রায়। তাই কোনও সংবাদ মাধ্যমে তাঁর সাক্ষাৎকার দেওয়া উচিত নয়। প্রসঙ্গত, সেই ইন্টারভিউতে জাস্টিস গাঙ্গুলি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে বলেছিলেন আমার মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হয় রুল জারি করে ওনাকে হাইকোর্টে ডেকে আনতে। চাইলে উনাকে তিন মাস জেল খাটাতে পারি। এরপরেই কোন মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে না থাকা সত্ত্বেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আচমকাই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন জাস্টিস গাঙ্গুলী।