আরও এক ফাসিস্তের
দর্পচূর্ণ

0

Last Updated on November 8, 2020 9:58 PM by Khabar365Din

পূষন গুপ্ত


১.

আধুনিক সমাজতাত্বিকেরা বলেন, বিশ্ব শাসন করে এখন মধ্যমেধার মধ্যবিরা। ধনীদের হাতে নিয়ন্ত্রণ, সর্বহারাদের একনায়কতন্ত্র, জিনিয়াস আর ট্যালেন্টরাই সমাজের মেরুদন্ড— এসব বাতিল, বাতিল। মধ্যমেধার মধ্যবিত্তদের কাছে অতি বামেরা আগেই বিদায় নিয়েছে, এবার বিদায়ের পালা শুরু হয়েছে উগ্র দক্ষিণপন্থীদের। ধনীরা থাকেন পর্বতশৃঙ্গে একাকী। দরিদ্রদের ঝুপড়িতে চেনাজানারাই। মধ্যবিত্তরা ভীতু সম্প্রদায়ের, তারা এক পা এগােয়, তিন পা পিছােয়। তারা না নাফা করে, না করে বিপ্লব, নিঃশব্দে ভােট দেয়। তাদের আবাসনে থাকে ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন রুচি, ভিন্ন জাতের মানুষ। মধ্যবিরা আশেপাশে প্রতিবেশীদের নিয়ে থাকতে ভরসা পায়। তারা মেক্সিকো থেকে, সিরিয়া থেকে, বাংলাদেশ থেকে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা মানুষদের নিজের দেশেরই ভাবে, প্রতিবেশি ভাবে না। মেক্সিকান বা মুসলমানদের দেশ থেকে খেদিয়ে দিয়ে কাঁটাতার বা পাঁচিল দিয়ে দেশকে সুরক্ষিত করার কথা ভাবে না। মধ্যবিত্ত মার্কিন মেক্সিকান, হিন্দু মুসলমান বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থেকেছে, থাকছে, তাদের ক্ষেপিয়ে, বােকা বানিয়ে কিছুদিন ক্ষমতায় থাকা যায়, বেশিদিন নয়। মধ্যবিত্ত মার্কিন বা ভারতীয়র কাছে উদ্বাস্তু কোনও ইস্যু নয়। এটাকে যেসব রাজনীতিবিদ ইস্যু বানায় তাদেরকে সরাবেই মধ্যবিত্তরা।

২.

যুক্তরাষ্ট্রের ডােনাল্ড ট্রাম্প বা ভারতের মােদি একে অপরের কার্বনকপি। সংখ্যাগরিষ্ঠের ভােটের রােয়াবে এরা মসজিদ ভেঙে রামমন্দির বানান, এরা কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের গলায় পা তুলে হত্যা করেন, যেভাবে ব্ল্যাকলাইভস ম্যাটার আন্দোলনে গুন্ডা পাঠিয়ে পেটানাে হয় সেই একই নীতিতে, একই মানসিকতা থেকে দিল্লির ক্যাবিরােধী আন্দোলনকে পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করা হয়। মধ্যবিরা এসব মনে মনে মেনে নেন না, তারা ভােটের জন্য অপেক্ষা করেন।

৩.

এইসব মানুষেরা নাগরিকত্ব বা কাগজ দেখানাের কথা বললেও নিজেরা আতঙ্কিত বােধ করেন, বেছে বেছে মুসলমানদের ভিসা বাতিলের কথা শুনলে লজ্জা পান, মুখে কিছু না বললেও মনে মনে ঘেন্না করেন। তােক দেখানাে নাটক, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক অথবা ভােটের আগে পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে বােমারু বিমান পাঠাননাকে মধ্যমেধার মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সম্প্রদায় মনে মনে ব্যঙ্গ করেন, হাসেন, এসব ভােটের জিগির বােঝেন। উগ্রজাতীয়তাবাদবড়লােকেদেরদরকার,ব্যয়েরজন্য, আরও মুনাফার জন্য, আর গরিবের দরকার পেটের খিদে ভুলে থাকার জন্য। জাতীয়তাবাদে, থুড়ি উগ্র জাতীয়তাবাদে মধ্যবিত্তর কঁচকলা।।

৪.

লক্ষ্য করছি অধুনা বিশ্বের ফাসিস্তদের চেহারা একরকম হয়ে যাচ্ছে। যারা হাউডি মােদি বলছেন, তারাই চিল চিৎকার করছেন নমস্তে ট্রাম্প বলে। পেছনে একই পুঁজি, একই বেওসার ছক, একই গরিবদের বােকা বানিয়ে রাখার ব্ল প্রিন্ট। ওদের একই মুখ এবং একই মুখােশ। মুখ থেকে মুখােশটাআলাদা করা যাচ্ছেনা,মুখেআটকে গেছে।

৫.

মধ্যবিত্ত ঠাকুমার কাছে শােনা, সেই পুরােনাে প্রবাদটি, আবার ওই অতিমানবদের মনে করাচ্ছি, অতিদর্পেহতলঙ্কা’দর্পচূর্ণেরঘণ্টা শুনতেপাচ্ছেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here