Last Updated on August 31, 2020 11:11 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। নিউটাউনে বসছে গ্রো ল্যাম্প। রাতের ফুলের ও গাছের দ্রুত বৃদ্ধি এবং একই সাথে সামাজিক সুরক্ষার এমন বিজ্ঞানমনস্ক পরিকল্পনা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রমী। নীল , লাল ফ্লুরোসেন্ট কনার পরাগ গায়ে মেখে রাতের নিউটাউনকে আরও মায়াময় করে তুলবে জুঁই, রজনীগন্ধারা। কৃত্তিম আলোর আলিঙ্গনে নিশীথ কামিনী চন্দ্রমল্লিকা, হাসনুহানারা হয়ে উঠবে মোহময়। সূর্যের অনুপস্থিতি কোনও বাধাই নয়। ধীর লয়ের অঙ্কুরণের বিলম্বিত সঞ্চার সে সৌন্দর্যে বাদ সাধবে না, কারণ ফুল দ্রুত ফোঁটার অনুরণননের দায়িত্ব নিচ্ছে বিজ্ঞানসম্মত এই গ্রো ল্যাম্প। বিজ্ঞানের তাকে বলে ভাষায় ফটোজেনেসিস টেকনোলজি। যা জাপানের প্রতিটি শহরে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিউটাউনের রাস্তায় ফুলের জলসাকে আরও উত্তরাধুনিক করে তুলতে গ্রো ল্যাম্প কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছেন হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। রাতের ফুল, এবং গাছও বাছা হয়েছে। যেহেতু এই ধরণের ফুলকে ফোটাতে বিশেষ ধরনের ল্যাম্প বা আলো লাগানো হবে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই বিশেষ ধরনের গ্রো ল্যাম্প এই প্রজাতির ফুল দ্রুত ফোটাতে এবং গাছের বৃদ্ধির সহায়ক। যা রাতে সূর্যালোকের অভাবও পূরণ করবে, সেই সঙ্গে রাস্তায় এই আলো থাকলে সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টাও নিশ্চিত হবে। তবে প্রাথমিকভাবে কলকাতা গেটের কাছে একটি বাগানকে চিহ্নিত করে, পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে, এবং এই উদ্যোগে বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হবে। যদি এই প্রাথমিক পরীক্ষায় সফলতা আসে তবেই আমরা গোটা নিউটাউন জুড়ে এই পরিকল্পনাকে এগোব, বললেন দেবাশিস বাবু। বিশিষ্ট উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. প্রশান্ত জয়নাল বললেন, দুর্দান্ত উদ্যোগ। নরওয়ের রাজধানী অসলোতে আটের দশকে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। খুব সাকসেসফুল। রজনীগন্ধা, বেল, টগর, জুঁই, চন্দ্রমল্লিকা জাতীয় রাতের ফুল ফুটতে এই হাই-ইন্টেন্সিটি ডিসচার্জ ল্যাম্প খুব কার্যকরী। মেটাল হ্যালাইড কিংবা প্রেসার সোডিয়াম অথবা এলইডি ও ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু কীভাবে কাজ করে এই গ্রো ল্যাম্প? সূর্যের আলো প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। যা উদ্ভিদের প্রয়োজন। সূর্যালোক আসলে সাতটি রঙের বর্ণালী, যার মধ্যে নীল ও লাল আলো গাছের ফুল, ফল ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। কৃত্রিমভাবে ঐ বর্ণালীর কেবল নীল ও লাল আলোকেই উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করাটাই গ্রো ল্যাম্পের কাজ। নিউটাউনের রাস্তায় যে ভাবে ফুল ও গাছ দিয়ে সৌন্দর্যের কাজ করা হয়েছে, তার সঙ্গে এই আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি যুক্ত হয়ে নতুন দৃষ্টান্ত গড়তে চলেছে। স্মার্টসিটি নিউটাউন সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।