দুবছর পর রুপোলি রেখা দেখছে কুমোরটুলি, ব্যস্ততা বাড়ছে পটুয়া পাড়ায়, চলছে খড়ের কাঠামোয় মাটি লেপার কাজ

0

Last Updated on July 5, 2022 6:16 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। সুলগ্না দাস। অভিশপ্ত করোনার অন্ধকার দশা কাটিয়ে দুবছর পর রুপোলি রেখা দেখছে কুমোরটুলি। উমা আরাধনায় বাকি মাত্র কটা দিন। আর, তার আগেই ব্যস্ততা বাড়ছে কুমারটুলিতে। ফিরছে অর্ডারের সারি। সম্পূর্ণ পটুয়া পাড়া জুড়ে চলছে খড়ের কাঠামোয় মাটি লেপনের কাজ। কোথাও কাজ শেষ। কোথাও আবার প্রথম পর্যায় কোথাও দ্বিতীয় পর্যায়। একইসঙ্গে বেড়েছে বায়নাও।

আর, তাতেই দিনযাপনের হাসি মৃৎশিল্পীদের মুখে। এই প্রসঙ্গে কুমারটুলি মৃৎশিল্প সাংস্কৃতিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রণজিৎ সরকার জানান, রথের দিন থেকে বায়না আসা শুরু হয়। এবারে, বায়নার হার কিছুটা কম। তবে, গত দু বছরের তুলনায় কিছুটা ভাল। এখনও অর্ডার আসা বাকি রয়েছে। আগস্ট পর্যন্ত আসবে অর্ডার।

তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে অর্ডার এসেছিল ৪ হাজারের বেশি। ২০২০ সালে সেই সংখ্যাটা পৌঁছায় ৫০০ থেকে ১০০০ এ। ২০২১ সালে একটু বেড়ে ১৫০০-২০০০। ২০২২ সালে অর্থাৎ, এই বছর এখনও পর্যন্ত ২৫০০-৩০০০ প্রতিমার বায়না এসেছে। আশা করছি, আরও বাড়বে এবং সংখ্যাটা সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার পৌঁছবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কুমারটুলি এলাকায় মোট ২০০ কাছাকাছি শিল্পীর ঘর রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বেশ কিছু গুদাম। সেখানেও প্রতিমার কাজ হয়।

এই প্রসঙ্গে এক শিল্পী জানান, ছোট ঠাকুর গোনা হয় না। করোনার কারণে অনেকেই স্থানীয় জায়গা থেকে ঠাকুর কিনে নেন। এই প্রসঙ্গে প্রতিমা শিল্পী মন্টু জানাচ্ছেন, আগের তুলনায় অর্ডারের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা কালে মানুষ নমো নমো করে পুজো সারছিলেন, ফলে প্রতিমার আকার ছোট হচ্ছিল। বাজেটেও টান ছিল। ফলে, মণ্ডপ থেকে সজ্জা সবই কমে এসেছিল। কিন্তু সেই তুলনায় এবার বাজার কিছুটা ভাল। প্রতিমা বিদেশেও পাড়ি দিচ্ছে।

ফলে, কিছুটা হলেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। চলতি মরশুমে সরস্বতী থেকে অন্যান্য প্রতিমার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ব্যস্ত থেকেছে কুমোরটুলি শিল্পীরা। করোনাকালে কোণঠাসা হয় মৃৎশিল্পীরা। সেই সময় হঠাৎ করেই একধাক্কায় বেড়ে যায় কাঁচামালের দাম। সেই দাম বৃদ্ধিতে কার্যত কোণঠাসা হয় শিল্পীকুল।

সেই নিয়ে গণেশ চন্দ্র মাল পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জানান, ৫২ বছর ধরে যুক্ত পূর্ব পুরুষের এই ব্যবসায়। আগের মতন বাজার নেই। করোনার জন্যে অর্ডার আসছে খুব কম। গত বছরের থেকে এই বছরে অর্ডার প্রায় অর্ধেক।’ তিনি যোগ করে বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেশি। অর্ডার নেই। কোনরকমে চালাবার মত পরিস্থিতি হয় গেছে। কাঁচা জিনিসের দাম বেশি। খড়, দড়ি, পেরেক, মাটি, বাঁশ এই সবের দাম আগের থেকে দ্বিগুণের বেশি।

একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন শিল্পী প্রদীপ পাল। তাঁর বক্তব্য, দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। সাত মাস কোন কাজ ছিল না। কোন মূর্তি বিক্রি করতে পারিনি। খুব অসুবিধার মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে। এখন সব কিছু চালু হয়ে গেছে। তবে আগের মতন প্রতিমা বিক্রি হয় না। অর্ডার কম, ঠাকুরের দামও কম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here