Last Updated on May 26, 2023 1:21 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। জামাইষষ্ঠীর ভুরিভোজ, সেরে ফল খাওয়ার রীতি চিরকালীন।সেই সূত্রেই এবার ফল বাজারে দেখা গেল শুধুই আমের দৌরাত্ম্য।ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, অতিরিক্ত ফলন, জৈষ্ঠ্যে কার্যত জলের দরে বিক্রি হচ্ছে আম। আর, সেকারণেই ষষ্ঠীর বাজারে বাকি ফলের দাম সেভাবে বাড়তে পারেনি। মানুষ ঝুঁকছেন আমের দিকেই। তবে, আমের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে লিচু। কেজি ১৫০ টাকা। ১২০ টাকা ছিল, ষষ্ঠী উপলক্ষে বেড়ে গিয়েছে ৩০ টাকার মত। এই প্রসঙ্গে টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য জানান, আম পাইকারি বাজারে শুরু হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।
খোলা বাজারে শুরু ৪০ থেকেই, যদিও কিছু জায়গায় দাম বিভিন্ন রকম। কোথাও ৫০ আবার ৬০ কিংবা ৭০ এও রয়েছে। আমএর ধরন অনুযায়ী হয় দাম। হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোলাপখাস, ফজলি, কাঁচা মিঠে সহ আরও অনেক ধরন। গত বছরের তুলনায় জামাইষষ্ঠী বাজারে একেবারে অর্ধেকে নেমে এসেছে দাম। সেবার ছিল ১০০ টাকার কাছাকাছি। উল্লেখ্য, গত বছর দুই যুগ পর আমের ফলন পৌঁছায় সর্বনিম্নে। অন্যদিকে, একেবারে ভিন্ন ছবি দেখা যায় লিচুর ক্ষেত্রে। উৎপাদন বেড়ে হয় দ্বিগুণ। শুরুর দিকে শহরের বাজারগুলোতে লিচুর দাম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। কিন্তু, অনেক জায়গায় দাম নেমে পৌঁছায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে।
সেই সময় ফলন ভালো প্রসঙ্গে টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, মূলত আবহাওয়া। বেশি গরমের কারণে লিচুর ফলন এবারে অত্যন্ত ভাল, প্রায় দ্বিগুণ। রাজ্যে দুই ২৪ পরগনা, মালদা এবং হুগলি সহ প্রায় সব জেলাতেই লিচুর হয়ে থাকে। অন্যদিকে, প্রায় ২৭ বছর পর গত বছর রাজ্যে আমের ফলন ছিল তলানিতে। ১৯৯৫ সালে আমের উৎপাদন ছিল সর্বনিম্নে। কিন্তু, এই ঘাটতির কারণ কি? এই প্রসঙ্গে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, গত বছরের (২০২১) তুলনায় ৪০ শতাংশ কম অর্থাৎ, অর্ধেকের একটু বেশি উৎপাদন হয়েছে।
তিনি কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথম, অস্বাভাবিক গরম, শীতের পর থেকে কোনরকম বৃষ্টি হয়নি। ফলে, মুকুল এসেও খসে গিয়েছে। মুকুল নষ্ট হওয়ার কারণেও আমের ফলন এত কম। শীতে অতিবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি, গ্রীষ্মে অনাবৃষ্টির কারণে ক্ষতি। দ্বিতীয় কারণ, মরশুম শেষ হওয়ার পর গাছের পরিচর্যা জরুরি। প্রত্যেক বছর এটা নিয়ম মেনে করা হয়। কিন্তু, করোনা করোনা করে সেই পরিচর্যা সঠিকভাবে করা যায়নি। ফলে, আম গাছে আগাছা জন্মেছে। মুকুল ঠিকভাবে আসেনি এবং বেড়ে ওঠেনি। এছাড়াও, নিয়মিত স্প্রে করতে হয়। কারণ গাছের পাতায় ধুলে জমে যাওয়ার কারণে মুকুল ধরেনি। সেটাও একটি কারণ। রাজ্যে মূলত সিংহভাগ আমের উৎপাদন হয় মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, হুগলিতে।