ড্যানিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদির বৈঠকে লাভ হল না, পুরুলিয়া অস্ত্র বর্ষণের কিংপিন ডেভিকে ফেরাতে ব্যর্থ মোদি

0

Last Updated on October 10, 2021 12:42 AM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। গৌতম লাহিড়ী । নয়াদিল্লি । দিনভর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ দিল্লি সফররত ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট্রে ফ্রেডেরিকসনের সঙ্গে বৈঠক করলেও পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণের মূল নায়ক কিম ডেভির প্রত্যর্পণ নিয়ে কোনো সমাধান করতেই পারলেন না। বৈঠকের পরে বিদেশমন্ত্রকের ইউরোপ বিভাগের সচিব রীণাত সান্ধু প্রথা মতো বলেন,“ কিম ডেভির প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করছি এই বিষয়টার আইনগত সমাধান হবে।” কিন্তু এই সমাধানের পথ সম্পর্কে কোনো কথা জানাননি। বৈঠকের পরে উভয় দেশের মধ্যে যে যৌথ বিবৃতি জারি করা হয়, তাতে পুরুলিয়া অন্ত্রবর্ষণের সমাধানের কোনো উল্লেখ করাই হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বেশি উদ্যোগ ছিল কিভাবে গুজরাতের ব্যবসসায়ীদের ফায়দা পৌঁছে দেওয়া যায়। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে বর্তমান সরকার পলাতক অপরাধীদের বিষয়ে গুরুত্ব দিতেই চান না। শুধু মুখেই আশ্বাস দেন। ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর একটি লাটভিয়ান আন্তোনভ এ এন ২৬ বিমান পুরুলিয়ার এক গ্রামে রহস্যজনকভাবে বিপুল অস্ত্রসম্ভার বর্ষণ করে। যার মধ্যে কয়েকশো একে ৪৭, ১৬ হাজার গুলি ঝালদার ঐ গ্রামে ফেলে দেয়। কয়েকদিন পরে ঐ বিমানটি ফের ভারতের আকাশে প্রবেশ করলে বায়ুসেনার মিগ বিমান তাড়া করে মুম্বাইতে অবতরণ করায়। তদন্তে জানা যায় ঐ ঘটনার কিং পিন ড্যানিশ নাগরিক নীল ক্রিচিয়ান নেলসন ওরফে কিম ডেভি। তদন্তে এও জানা যায়, বিমানে পাঁচজন লাটভিয়ান নাগরিক, এবং পিটার ব্লিচ নামে এক ব্রিটিশ নাগরিক এবং এক বিশেষ ভাড়াটে মাসিনারি ছিল। পিটার ব্লিচ ও লাটভিয়ান বিমান কর্মীদের আটক করা হয়।

কিন্তু কিম ডেভি সকলের চোখে ধুলো দিয়ে পালায়। লাটভিয়ান নাগরিকদের তদানীস্তন বাজপেয়ী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবানি ২০০০ সালে মুক্তি দিয়ে দেন। পরে ব্রিটিশ সরকারের চাপে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পিটার ব্লিচকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। কিম ডেভির বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিশ জারি করে। পরে ২০০৭ সালে কিম ডেডির সন্ধান মেলে ডেনমার্কে। তখন দিল্লিতে মনমোহন সিং-র নেতৃত্বে ইউপি সরকার। তাঁদের চাপে ডেনমার্ক সরকার ২০১০ সালে কিম ডেভিকে ভারতের প্রত্যর্পণে রাজি হয়। কিন্তু ড্যানিশ হাইকোর্ট প্রত্যর্পণে রাজি হয়নি। এরপর ভারতে থেকে বারবার চাপ দেওয়া হয়, ড্যানিশ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা জন্য। কিন্তু ডেনমার্ক সরকার রহস্যজনক কারণে এখ নও তাতে রাজি হয়নি। ইতিমধ্যে দিল্লিতেও সরকার বদল হয়েছে। মোদীর নেতৃত্বে এনডি সরকার। তারাও চুপ। আজ যখন সুযোগ এলো তখন ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়েই বেশি কথা হলো। কিম ডেভির বিষয়টা নমো নমো করে সারা হল। সচিব বললেন, “ গোটা বিষয়টার আদালতে সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছি।” করোনা অতিমারীর দেড় বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করলেন। তাও ডেনমার্ক। অথচ অমীমাংসিত পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণের রহস্য সমাধানের থেকেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গুরুত্ব পেলো। ডেনমার্ক কিম ডেভিকে প্রত্যর্পণে রাজি না হওয়ায় আগে ভারত সরকার ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা তৈরি করেছিল। মোদি সরকার উষ্ণতা’ আনছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here