Last Updated on September 22, 2021 10:51 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। একদিকে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছে তালিবান জঙ্গিরা, অন্যদিকে জো বাইডেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদে বসার পর থেকেই বারেবারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এবং বিভিন্ন সরকারি এজেন্সির পক্ষ থেকে ভারতের নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার চলছে বলে সমালোচনা করা হচ্ছে। এমনকী মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের প্রত্যক্ষ মদতে ভারতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এক ঘরে হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এবং ভারতে তালিবানি আক্রমণ কিভাবে প্রতিহত করবেন তার দিশা খুঁজে না পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে দৌড়ালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদি কোনভাবে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনকে ম্যানেজ করা যায়।
এমনিতেই বাইডেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদে বসার আগে থেকেই তার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। প্রসঙ্গত মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী তার বিগত মার্কিন সফরে গিয়ে নিজের বন্ধু বলে ঘোষণা করেছিলেন পূর্বতন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এরপরে ট্রাম্পকে ভারতের আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে স্লোগান তুলেছিলেন আব কি বার ট্রাম্প সরকার। এছাড়াও বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রপতি থাকার সময় নরেন্দ্র মোদিকে দাঙ্গাবাজ তকমা দিয়ে মার্কিন মুলুকে মোদির ভিসা নিষিদ্ধ করেছিলেন। শুধু তাই নয় মোদি শাসনে ভারতের কৃষক এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক স্তরে লিখিত রিপোর্ট প্রকাশ করে বাইডেন প্রশাসন।
তাই ভারতে একদিকে যেমন সমস্ত বিরোধীদল জোট বাঁধছে আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদিকে হারানোর জন্য, সেই সময় আন্তর্জাতিক স্তরে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেনকে পাশে পেতে তাঁর এই মার্কিন সফর। যদিও মার্কিন মুলুকে রওনা হওয়ার আগে মোদি দাবি করেছেন বাইডেনের আমন্ত্রণেই নাকি তিনি যাচ্ছেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর কোয়াড সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। ২৫ শে সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে নরেন্দ্র মোদি স্লোগান দিয়েছিলেন সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। অথচ কাজ এবং কথায় কতখানি ফারাক, তা বারেবারে যেমন উঠে এসেছে ফের একবার দেখা গেলো তার নিজের কাজে। বারে বারে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে দেশের মানুষকে ভারতে তৈরি ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়ে গেছেন। অথচ প্রায় এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোভ্যাকসিন পায়নি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ব্রিটেনে এখনো পর্যন্ত যে সমস্ত ভারতীয় কোভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাদের দেশে পা রাখছে তাদের ননভ্যাকসিনেটেড হিসেবে গণ্য করে আবার ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করছে। অথচ তার মধ্যেই নিজে কোভ্যাকসিন নেওয়া সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে চলে গেলেন নরেন্দ্র মোদি। ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়পত্র না দেওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মোদি ভ্যাকসিন না নেওয়া একজন ব্যক্তি।
৪ হাজার কোটি টাকার বিমান
মার্কিন রাষ্ট্রপতি যে এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে চড়ে তার অনুকরণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কেনা হয়েছে দুটি এয়ার ইন্ডিয়া বিমান। করো না পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘদিন বিদেশ সফরে যেতে না পারলেও চার হাজার কোটি টাকার এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ানে চড়ে এটাই মোদির প্রথম বিদেশ সফর।