Last Updated on December 5, 2021 11:26 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। ফের একবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থতায় প্রাণ গেল ১১ নিরীহ গ্রামবাসীর। নাগাল্যান্ডের সীমান্তবর্তী মন এলাকায় সেনা ইন্টেলিজেন্স তথ্যের উপর নির্ভর করে অনুপ্রবেশকারীর সন্দেহে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। যেখানে আসাম রাইফেলস এবং সেনাবাহিনীর আরো শাখার জওয়ানরা ছিল বলে জানা গিয়েছে প্রাথমিকভাবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহা থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে লিখিতভাবে বিবৃতি দিয়ে গোটা ঘটনার থেকে একটি ভুল বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। তবে একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর লিখিত বিবৃতিতে যেভাবে সেনা গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে এই অপারেশন চালানো হয়েছিল বলে লেখা হয়েছে, তা গোটা দেশজুড়ে মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের ব্যর্থতা এবং সর্বোপরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চূড়ান্ত ব্যর্থতার প্রমাণ হল বলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তদন্তের দাবি
নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মনের ওটিঙে যে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। উচ্চপর্যায়ের বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করে আইন মোতাবেক বিচার পাবেন মানুষ। একইভাবে ঘটনার প্রকৃত তদন্তের পাশাপাশি বিচার চেয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, নাগাল্যান্ডের খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আমাদের অবশ্যই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে সকল ভুক্তভোগী যেন ন্যায়বিচার পান! এরপরেই কোর্ট অব ইনকোয়ারির নির্দেশ দিয়েছে সেনাবাহিনী। রাহুল গান্ধী টুইট করেন, ভারত সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঠিক কী কাজ করছে?
তবে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে নাগাল্যান্ডের ভাজপার একমাত্র বিধায়ক তথা ভাজপা রাজ্য সভাপতির লিখিত বিবৃতিতে। নাগাল্যান্ড ভাজপা রাজ্য সভাপতি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স চূড়ান্ত ব্যর্থ এবং তার জন্য প্রাণ দিতে হলো সাধারণ মানুষকে। নাগাল্যান্ডের রাজ্য প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগাল্যান্ডের মন জেলার ওটিং গ্রামে সন্ত্রাস দমন অভিযান চালাচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অভিযোগ, সে সময় স্থানীয় জঙ্গি সংঠন এনএসসিএন-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের উপর গুলি চালান নিরাপত্তারক্ষীরা। তিরুর একটি কয়লা খাদান থেকে পিক-আপ ভ্যানে করে তাঁরা নিজেদের গ্রামে ফিরছিলেন। সেই সময় গাড়ি লক্ষ্য করে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ওই পিক-আপ ভ্যানে ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ডের (এনএসসিএন) বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ছিল বলে মনে করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। মন জেলার জেলাশাসক জানিয়েছেন সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনায় এক নিরাপত্তাকর্মীসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার শোকপ্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লেখেন, নাগাল্যান্ডের মনের ওটিঙের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় শোকাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। রাজ্য সরকার সিট গঠন করেছে। পুরো ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে, যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবার যাতে সুবিচার পায়। তাঁর পরেই সরকারি বিবৃতিতে আসাম রাইফেলস বলেছে যে, সন্ত্রাস দমনের জন্য বিশেষ পরিকল্পনায় তিরু-ওটিং রোডে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এলাকায় একটি নির্দিষ্ট অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ঘটনা এবং এর পরের ঘটনা গভীরভাবে দুঃখিত। প্রাণহানির কারণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।