৩৬৫ দিন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন উদ্ধব ঠাকরে। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় জানায় বৃহস্পতিবার-ই মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে উদ্ধবকে। তারপর-ই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন শিবসেনা প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণা করে উদ্ধব বলেন, শিব সৈনিকদের রক্ত ঝরুক এটা দেখতে চাই না তাই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে দিচ্ছে অপ্রত্যাশিতভাবে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে ছিলাম এবং সেই ভাবেই ইস্তফা দিচ্ছি। আমি স্বীকার করছি আমি এমন কিছু মানুষকে বিশ্বাস করেছিলাম যারা বিশ্বাস করার যোগ্য ছিল না এর জন্য আমি প্রত্যেক সৈনিকের কাছে ক্ষমা চাইছি তবে আমি ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছি না আমি এখানেই থাকব শিবসেনা ভবনে আমি বসব আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন। লড়াই শুরু হল এর শেষ দেখে ছাড়ব। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার-ই উদ্ধব ঠাকরেকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে- বৃহস্পতিবার এমন-ই রায় দিল সুপ্রিমকোর্ট। এদিন প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা শুনানি চলে শীর্ষ আদালতে। রাত ৯ টার কিছু পরে রায় ঘোষণা করে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি পাড়িয়ালার ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন শুনানি শুরু হতে আস্থা ভোট ঘোষণা বেআইনি দাবি করে শিবসেনার তরফে একাধিক যুক্তি দেওয়া হয়।
একটি নির্বাচিত সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে আস্থা ভোটে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন রাজ্যপাল ! মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিংহ কোশিয়ারির ভুমিকা নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে প্রশ্ন তুলল শিবসেনা। শিবসেনার তরফে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা না হলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না।
একনাথ শিন্ডে-সহ ১৬ জন বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কের পদ খারিজের মামলা ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। দলবিরোধী আচরণের অভিযোগে ডেপুটি স্পিকারের নোটিসের জবাব দিতে ১২ জুলাই পর্যন্ত শিন্ডেদের সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তার মধ্যেই রাজ্যেপালের এই নির্দেশ একেবারেই আইনসঙ্গত নয়। সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ করছেন রাজ্যপাল। শীর্ষ আদালত রাজ্যপালের নোটিশের ওপর স্থগিতাদেশ দিক। এদিকে একনাথ শিন্ডের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, তারা শিবসেনা ছাড়ছেন বলে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে। তারাই আসল শিবসেনা। আইনজীবী মহলের মতে শিবসেনা তরফে কার্যত অকাট্য যুক্তি এদিন পেশ করা হয় শীর্ষ আদালতে তার পরেও সুপ্রিম কোর্ট কিভাবে আস্থা ভোটের পক্ষে রায় দিল তা যথেষ্ট বিস্ময়ের ব্যাপার। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এর উপর যে কোন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক যদি অন্য বিধায়কদের সই সম্বলিত পত্র দিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানায় বা নির্বাচিত সরকার ভেঙে দেওয়ার দাবি জানায় তাহলে অন্যান্য রাজ্যে একই কৌশল গ্রহণ করবেন রাজ্যপালরা। যেকোনো নির্বাচিত সরকারের পক্ষে যা অত্যন্ত আশঙ্কার। আইনজীবি মহলের একাংশ এমনও বলছেন যেখানে একটি মামলা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়ে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় রয়েছে যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তার মধ্যেই কিভাবে সেই সংক্রান্ত অন্য একটি মামলা শুনানি সুপ্রিম কোর্টের সম্ভব হলো এবং সে মামলার রায় পর্যন্ত ঘোষণা হয়ে গেল।
গোয়ার পথে বিক্ষুব্ধরা, কাল মুম্বাইয়ে
শিবসেনার হাত থেকে বাঁচতে কার্যত ভারত ভ্রমণে বেড়িয়েছেন শিবসেনার বিক্ষুব্ধরা। প্রথমে গুজরাতের সুরাত, সেখান থেকে সুদূর উত্তর পূর্বের অসমের পাঁচতারা হোটেল থেকে এবার গোয়া। শিবসেনার হাত থেকে বাঁচতে ভাজপা শাসিত রাজ্য-ই ভরসা শিন্ডে এন্ড কোং – এর। সূত্রের খবর, বুধবার রাতের বিশেষ ওয়বিমানে গোয়া রওনা হচ্ছেন শিন্ডে এবং তার বাহিনী। সেখানে কোনও বিলাশ বহুল হোটেলে গা ঢাকা দিয়ে বৃহস্পতিবার যদি আস্থা ভোট হয় তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মুম্বাই পৌঁছবেন তারা। পাল্টা খোঁচা দিয়েছে শিবসেনা। বিক্ষুব্ধদের পাল্টা আক্রমণ করে শিবসেনার বক্তব্য শিবসেনা হাত থেকে বাঁচতে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছে বিশ্বাসঘাতকরা তারপরেও গদ্দারদের জয় হবে না। এদিনও আদিত্য ঠাকরে দাবি করেন তাদের সঙ্গে অন্তত 15 থেকে 20 জন বিধায়ক সম্পর্ক রেখে চলছেন। মহারাষ্ট্রে এলে ই বোঝা যাবে কাদের কত শক্তি।