৩৬৫ দিন। বর্ধমান। রেজিস্ট্রি বিয়ে হওয়ার পর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে রায়না থানার পুলিস। ধৃতের নাম শেখ মনিরুল হক। রায়না থানার দক্ষিণকূলে তার বাড়ি। পুলিস জানিয়েছে, রায়না থানারই হরিকৃষ্ণপুরে ওই যুবতীর বাড়ি। তাঁর সঙ্গে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মনিরুলের রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়। সামাজিকভাবে বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত যুবতী বাপেরবাড়িতে থাকবেন বলে দু’পক্ষের আলোচনায় স্থির হয়। রেজিস্ট্রি বিয়ের পর থেকেই নিয়মিত যুবতীর বাড়িতে যেতে থাকে মনিরুল।
কিন্তু, সামাজিকভাবে বিয়ে না হওয়ায় যুবতী কিছুটা এড়িয়ে চলতেন। কিন্তু, মনিরুল তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করার চেষ্টা করত। গত বছরের ২ জানুয়ারি যুবতীর বাড়িতে যায় মনিরুল। বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মনিরুল ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন যুবতী। সামাজিকভাবে বিয়ে না হওয়ায় কোনওভাবেই সহবাসে সম্মতি দিতে চাননি যুবতী। তিনি বাধা দেন। সেজন্য তাঁকে মারধর করা হয়।
এরপর মনিরুল যুবতীর বাড়ি থেকে চলে আসে। ২-৩ দিন পর সে তার কর্মস্থল ছত্তিশগড়ের রাইপুরে চলে যায়। যুবতী ও তাঁর বাবা বহুবার মোবাইলে মনিরুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। মনিরুলের বাবাকেও যুবতীর বাবা ফোন করেন। মনিরুল যুবতীকে সামাজিকভাবে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। অন্য কাউকে সে বিয়ে করবে বলে যুবতীকে জানায়। মনিরুলের বাবাও যুবতীকে কোনওভাবেই পুত্রবধূ বলে মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এরপরই যুবতী গত ৩ জুন রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যুবতীর আরও অভিযোগ, রেজিস্ট্রি বিয়ের সময় তাঁর বাবা সোনার গয়না, অন্যান্য জিনিসপত্র ও ১০ লক্ষ টাকা পণ দিয়েছিলেন। তা আত্মসাৎ করে নিয়েছে মনিরুল। অভিযোগ পেয়ে বধূ নির্যাতন, প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, ধর্ষণের চেষ্টা ও পণ নিরোধক আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে থানা।
বুধবার রাতে রায়না থানার বোড়ো থেকে পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
এদিনই ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ২২ জুন ধৃতকে ফের আদালতে পেশের নিের্দশ দেন সিজেএম। এদিনই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যুবতীর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিস। ধৃতের মেডিকেল পরীক্ষার জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।