Last Updated on July 7, 2022 10:02 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। সাত মাসে সাত অধিনায়ক। এ এক আজব জ্যপাট। ক্রিকেট ইন্ডিয়া না বলে রাজ্যপাট বললাম বলে ঠিক চমকে যাবেন না! সে এক দেশ ছিল। রাজা নাই কেবল স্ত্রী আছে, আছে কোটাল,পাত্র মিত্র। শত্রুদেশ রাজ্য দখল করে।
সাত মাসে সাত অধিনায়ক!
শাহারা,রাজা নেই!বন্দী বানাবে কাকে? কেই বা সন্ধি চুক্তি ই করবে? অবশেষে তল্পি তল্পা গুছিয়ে জয়ী রাজা দেশ ছাড়ে। স্ত্রীরা বেজায় খুশি। এটাই তো চাই।হারলেও দোষ নাই।মন্ত্রীতো আর যুদ্ধে যাননি। আফ্রিকান উপকথার এই গল্পটার সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনেক মিল। জয় শাহ দুর্দান্ত খুঁটি জিয়েছেন। সাত মাসে আট অধিনায়ক। হারলেও বোর্ড ভাগীদার নয়, আর জিতলে তো বোনাস।
অবিবেচকের মত এই সদ্ধান্তে সবচয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতীয় ক্রিকেট ও তরুণ খে লায়াড়রা। কোনও মাইন্ডসেট তৈরি হল না। নির্দিষ্ট সেনাপতি থাকায় সব তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে। এক একজন অধিনায়ক এক এক রকম মানসিক অবস্থান,ভাবনা,পরিকল্পনা নয়ে চলেন। এরা সবাই পৃথক মানুষ। প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা,দর্শন আলাদা। কিভাবে টিমের বাকিদের বন্ডিং গড়ে উঠবে? কার ক্রিকেট দর্শন তারা অনুসরণ করবেন?
বোর্ড কি ভেবে দেখেছে প্রতি এক বছরে প্রধানমন্ত্রী বদলালে কি হতে পারে দেশের? এই থিওরি একবার এনেছিল ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। কাফু থেকে লুসিও, থিয়েগো সিলভা তারপর মার্সেলো, মার্সেলোর পর আবার ঘরে থিয়েগো। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে তালিকাটা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, ঋষভ পন্ত, হার্দিক পান্ডিয়া, যশপ্রীত বুমরাখ এরপর শিখর ধাওয়ান। ভারতের অধিনায়কের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ওয়ানডে সিরিজের জন্য অধিনায়ক করা হয়েছে ধাওয়ানকে। এ বছর ধাওয়ানকে নিয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে সাত জন ভিন্ন অধিনায়ক দেখল ভারত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে কোহলি ওই সংস্করণের নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন, এরপর তো তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ওয়ানডে থেকেও। পরে টেস্ট থেকে নিজেই সরে দাঁড়ান তিনি।
মূলত কোহলি সরে যাওয়ার পর থেকেই নতুন নতুন অধিনায়ক দেখছে ভারত। কখনো চোট, কখনো বিশ্রাম, কখনো কাছাকাছি সময়ে সিরিজ হওয়াতে অধিনায়কত্বের এই মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা খেলতে হচ্ছে। বিসিসিআইকে।সর্বশেষ ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সফরে একেবারেই নতুন দুজন অধিনায়কত্ব করেছেন ভারতের হয়ে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া, যিনি এর আগে কখ নো জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেননি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওই সিরিজের সময় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন রোহিত শর্মারা। দ্বিতীয় ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর আইরিশদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে পান্ডিয়ার ভারত।
পান্ডিয়ার জয়ে শুরু হলেও বুমরার ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্ন অভিজ্ঞতাই হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টটি খেলতে পারেননি রোহিত, তাঁর জায়গায় ভারতকে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিয়েছেন বুমরা। কোনো ধরনের ক্রিকেটেই এর আগে তাঁর অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা ছিল না সেভাবে।
এজবাস্টন টেস্টের পর ভারত এখন ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে তিনটি করে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে। ওয়ানডে সিরিজ চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ২২ জুলাই। মুখ থুবড়ে পড়ার জন্য ভারতীয় বোর্ড তৈরি থাকুক।