বাংলায় ভাজপা ঢােকাতে
মোদিজি, খরচ কত পড়ছে?

0

Last Updated on April 20, 2021 11:57 PM by Khabar365Din

টিম খবর ৩৬৫ দিন


৩৬৫ দিন। বাংলা থেকে মমতাকে হঠাতে ভাজপা যে প্রজেক্ট নিয়েছে তাতে দিল্লি থেকে কলকাতা আকাশপথে যাতায়াতের খরচ আমরা দেখিয়েছি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেন। বাকি নেতা-মন্ত্রীরা সব কলকাতায় ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছে। কলকাতার ৬ থেকে ৭টি পাঁচতারা হোটেলে তাদের ঘর সেই ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বুক করে রাখা হয়েছে। স্যুইট সহ সেইসব ঘরের ভাড়া দিনে প্রায় প্রত্যেকটির ১০ হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে তিন ও চার তারা হোটেল। মাঝারি মাপের নেতাদের জন্য সেখানেও ব্লক বুকিং করে রেখেছে ভাজপা। ভিন্ন রাজ্য থেকে বহু লোক এসেছে এবার। বউবাজার থেকে শুরু করে নিউ মার্কেট, সদর স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট থেকে বাইপাস লাগোয়া কসবা পর্যন্ত ছোট-বড় সমস্ত হোটেলের ৯০ শতাংশের বুকিং তারা নিয়ে রেখেছে। এই তালিকায় অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পড়েন না। কারণ, তার খরচ সম্পূর্ণ বহন করে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ, আপনার-আমার ট্যাক্সের টাকায় ভাজপা তাকে স্টার ক্যাম্পেইনার বানিয়ে আমাদের রক্ত শুষে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী এখানে রাত্রিযাপন করেন না বটে কিন্তু তার লটবহরের পিছনে কত টাকা খরচ হয় তাই দিয়ে শুরু করা যাক।
১.
ধরা যাক, প্রধানমন্ত্রী আসানসোলে সভা করবেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছানোর দুদিন আগে এসপিজি ও পিএমওর লোকজনেরা পৌঁছে যাবে আসানসোল। প্রথমেই সেখানকার সেরা চারটি হোটেল তারা বুক করে নেবে। এসপিজি যেখানে থাকবে অর্থাৎ কন্ট্রোল রুম যেখানে হবে সেখানে কারুর প্রবেশাধিকার নেই। সেইসঙ্গে কমপক্ষে কুড়িটি গাড়ি ভাড়া করা হবে। এর মধ্যে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী বুলেটপ্রুফ গাড়ি নেই। সেটা আসবে আকাশপথে, দিল্লি থেকে। নির্ধারিত দিনে আসানসোলে জনসভা করে প্রধানমন্ত্রী চলে যাবেন পুরুলিয়ায়, সূচি অনুযায়ী তার পরবর্তী জনসভায়। তার দুদিন আগে থেকে ঠিক একই রকমভাবে পুরুলিয়াতেও সেরা চারটি হোটেল বুক করে এসপিজি তার কন্ট্রোলরুম বসিয়েছে। পিএমওর অফিসাররা কোঅর্ডিনেট করছে এবং সেখানেও কুড়ি-পচিশটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। সেই দিনে যদি প্রধানমন্ত্রী অন্যত্র আরও একটি জনসভা করেন তাহলে পুরো ঘটনাটাই একইরকম ঘটবে। কারণ, এটাই নিয়ম। অর্থাৎ দুই থেকে তিন সেট এসপিজি এবং পিএমও অফিসাররা রাজ্য সরকারের পয়সায় ভাজপা প্রচারে রাজকীয় ভাবে থাকবে এবং অন্ন ধ্বংস করবে। মনে রাখতে হবে মার্চ মাস থেকে প্রায় প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী বাংলায় আসছেন এবং দুটি থেকে তিনটি জনসভা করছেন।
২.
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জন্য কলকাতার দুটি পাঁচতারা হোটেলে ঘর বুক করার রয়েছে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। ওয়েস্ট ইন এবং আইটিসি রয়াল ছাড়া তিনি কোথাও ওঠেন না এবং সেই টাকা অবশ্য সরকারি কোষাগার থেকে আসে না, তার দল দেয়। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার ঢের আগে থেকে ভাজপার স্থানীয় পার্টি অফিস এইচএইচআই। হোটেলের প্রায় পুরোটাই কয়েক কোটি টাকা দিয়ে তারা বুক করে নিয়েছে। বহু নেতা মন্ত্রী ওখানেই ওঠেন। বিশেষ করে যারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচনে কোঅর্ডিনেট করছেন। তবে স্টার ক্যাম্পেইনার, ছোট-বড় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য অন্য পাঁচতারা হোটেলে ঘর বুক করা আছে। সেন্ট্রাল লিডারশিপের কথামতো পাঁচতারা পার্টি অফিস থেকে তা নির্ধারিত হয়।
৩.
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময় ভাজপা ভিন রাজ্য থেকে বহু মানুষ (বেশিরভাগই অসামাজিক) এনে নিউ মার্কেট, সদর স্ট্রিট এলাকার হোটেলে তুলেছিল। এবার লোক এসেছে তার দশগুণ বেশি। ফলে বউবাজার থেকে কসবা ছোট-বড় সব হোটেল কোথাও জায়গা নেই। এই মাঝারি মাপের নেতা, যারা মূলত প্রতিবেশী রাজ্য থেকে লোক এনে রোড-শোক কোঅর্ডিনেট করার দায়িত্বে, তাদের আমোদ-আহ্লাদে ব্যবস্থাও করতে হচ্ছে দলকে। গোয়েন্দা পুলিশের সন্দেহ, এই বহিরাগতদের মধ্যে কিছু হাইপ্রোফাইল এস্কর্টসও রয়েছে।
৪.
পাওয়ার ব্রোকার অর্থাৎ, যারা ভাজপার হয়ে টাকা লেনদেন করার জন্য এসেছে তাদের প্রায় কেউই কলকাতায় থাকছেন না। এরা থাকছে শহরের কিছুটা বাইরে হাইওয়ের ধারে তৈরি হওয়া পাঁচতারা রিসোর্টগুলিতে। এই নতুন তৈরি হওয়া রিসোর্টগুলিতে থাকা- খাওয়ার মূল্য পাঁচতারা হোটেলের মতন। এরাই টাকার মূল রিসোর্স। টাকা-পয়সার লেনদেনে যাতে গোপনীয়তা থাকে তাই এরা রয়েছে মূল ভূখণ্ডের সামান্য বাইরে। একমাত্র পাঁচতারা পার্টি অফিস ছাড়া এরা কাউকে যোগাযোগ করে না বা এদেরও হদিশ কেউ জানে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here