Last Updated on September 9, 2021 5:29 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। একুশের নির্বাচনে পরাজয়ের পরে আরো এক অবশ্যম্ভাবী পরাজয় আটকাতে শেষমেষ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলো ভাজপা। গোটা দেশে যেভাবে নরেন্দ্র মোদী জমানায় ভাজপা শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে আদালত মান্যতা পেয়েছে, বাংলাতেও তার কোন ব্যতিক্রম হল না। তাই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কেন উপনির্বাচন হচ্ছে, এই দাবি তুলে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হলো জনস্বার্থের মামলা।
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন সহ বাংলার ৩ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় এক সপ্তাহ আগে ভোট গ্রহণের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল প্রথমেই ঘোষণা করে দিয়েছে ভবানীপুর বিধানসভার এবং সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থী তালিকা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় শূন্য স্কোর করা সিপিএম তথা বামফ্রন্ট পর্যন্ত খুঁজে পেতে প্রার্থী জোগাড় করে ফেলেছে। অথচ মাস কয়েক আগে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে বাংলায় তুলে নিয়ে এসে সুনার বাংলার স্বপ্ন দেখানো ভাজপা এখনো পর্যন্ত ৩ বিধানসভা কেন্দ্রের কোথাও প্রার্থী খুঁজে পায়নি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন দলের কোনো নেতা এবং নেত্রী ভবানীপুরে প্রার্থী হতে চাইছেন না।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বাংলায় ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র উপ নির্বাচনের জঙ্গিপুর ও সংসদ নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরেই শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বাংলার ভাজপা নেতারা ঠিক যে সুরে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন কেন ভবানীপুরে ভোটগ্রহণ হবে, সেই দাবি নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় নামে সিপিএমের আইনজীবী সেলের এক নেতা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে বাংলায় সিপিএম এবং বিজেপি আঁতাতে বাম-রাম জোট গড়ে মমতাকে হারানোর চেষ্টা কোন নতুন কিছু নয়। এবারে পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বুঝতে পেরেও তাই শেষ চেষ্টা করতে মমতার ভোটগ্রহণ আটকাতে হাইকোর্টে দায়ের হলো মামলা। মামলাকারীর বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব কেন কোনও একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের জন্য ভোট চাইলেন? নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের জন্য যে নির্দেশিকা জারি করেছে সেখানে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করবেন বলে মুখ্যসচিব চিঠি দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। না হলে নাকি বাংলায় সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেটি তো মুখ্যসচিব ঠিক করতে পারেন না। শুধুমাত্র তাঁর চিঠির প্রেক্ষিতেই কেন ভোটের দিন ঠিক করা হল? এখনও তো অন্য চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন বাকি আছে।
এই আবেদন জমা পড়ার পরেই কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল অবিলম্বে মামলা গ্রহণ করে আগামী সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন। একইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের কাছে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।