Last Updated on July 8, 2023 7:14 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। বিরোধীরা লজ্জাজনকভাবে মিথ্যাচার করে চলেছে ভোটের দিন সকাল থেকে। শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জন তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী খুন হয়েছেন বিরোধীদের হাতে। এদিন দুপুরে ভোট চলাকালীন এমনই তথ্য তুলে ধরে বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এদিন সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট শুরু হয়। কিন্তু একে একে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সামনে যখন ভিড় বাড়তে শুরু করে তখন রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাসে নামে বাম রাম ও কংগ্রেস জোট।ভোটদান প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে কোমর বেঁধে পথে নামে বাম রাম, কংগ্রেস আইএসএফের মত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এদিন সকালে ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু, গতকাল রাত থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূল কর্মীদের নিশানা করছে এবং আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
রেজিনগর থেকে ডোমকল, সর্বত্রই আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। এমনকী, তাঁদের খুন পর্যন্ত করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হল, কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় গেল? সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস এবং আইএসএফ কর্মীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। নন্দীগ্রামেও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এর থেকেই প্রমাণিত যে আমরা শান্তি চাইলেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে। তৃণমূল কংগ্রেস হিংসাকে সমর্থন করে না। বাংলার মানুষ আমাদের পক্ষে এবং আমরা যে উন্নয়ন করেছি, তার পক্ষে ভোট দেবেন। তাঁরা আমাদের সঙ্গে আছেন।’ হিংসার প্রতিবাদ করে মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘এই বিরোধী নেতারাই কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছিলেন।
কিন্তু, আমরা বুঝতে পারছি না, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ঠিক কী? তাদের সামনেই আমাদের কর্মীরা এবং সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলার মানুষকে নিরাপত্তা দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কী করণীয়?’ এদিন সকাল থেকেই তৃণমূল কর্মীরা হয় গুন্ডাদের হাতে খুন হয়েছেন অথবা আক্রান্ত হয়েছেন। রেজিনগর, তুফানগঞ্জ এবং খড়গ্রাম সহ রাজ্যের একাধিক অঞ্চল জুড়ে ৬ জন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন বিরোধীদের ছড়া বোম এবং গুলির আঘাতে এমনই অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
জলপাইগুড়িতে বুথের ভিতরেই দু’জন তৃণমূল কর্মীর উপর হামলা শনিবার সকালে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা নারায়ণপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর স্বামীকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এমনকী, ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করে ক্রুড বোমা ছোড়া হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ১৪৪ এবং ১২৯ নম্বর বুথে বিজেপি কর্মীরা ভোটারদের ভয় দেখান এবং আতঙ্ক ছড়ান। এমনকী, তাঁরা বুথে উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলাও চালান। জেলার ভগবানপুর-২ ব্লকের ১৭৭, ১৮২, ১৮৩ এবং ১৮৪ নম্বর বুথে বিজেপি কর্মীরা ভোটারদের ভয় দেখান। শুক্রবার রাত থেকেই হিংসার ঘটনা ঘটতে শুরু হয়। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই গাজা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল কর্মী তপন ঘোষকে মারধর করা হয়। হামলাকারীদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বিজেপি কর্মী বিশ্বনাথ ঘোষ, গৌতম ঘোষ, অমিত ঘোষ, ভারত ঘোষ, দেবকুমার ঘোষ এবং লবকুমার ঘোষ।
ভাজপার পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বিএসএফ কেন্দ্রীয় বাহিনী ভাজপাকে ভোট দিন, ভোটের লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষকে এভাবেই ভাজপার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন করছে বিএসএফ ও কেন্দ্রীয়বাহিনীর জোয়ানেরা এমনই অভিযোগ তৃণমূলের।কোচবিহার এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই গীতালদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা অনৈতিকভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। কোচবিহারের তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোটার স্লিপ দেওয়ার জন্য নিয়ম মাফিক তৃণমূলের শিবির তৈরি করা হয়েছিল। হঠাৎই এক বিএসএফ সদস্য সেখানে আসেন এবং ওই জায়গা খালি করে দিতে বলেন। এমনকী, তিনি ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন এবং তাঁদের ভোটদান থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন।
এতে ভোটাররা রেগে যান এবং ঘটনার ভিডিয়োগ্রাফি করতে শুরু করেন। এরপরই ওই বিএসএফ সদস্য সেখান থেকে পালিয়ে যান।’ বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী যেভাবে গণতন্ত্রকে খুন করার চেষ্টা করছে, তার কড়া নিন্দা করেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া- ১ এলাকার ৩৫ নম্বর বুথে আরও একটি ঘটনা ঘটে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে বলতে দেখা যায়। তাঁরা ভোটারদের সরাসরি প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এই আইনভঙ্গকারীদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া- ১ এলাকার ৩৫ নম্বর বুথ থেকে আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি। ভোটাররা যখন শান্তিরপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছিলেন, তখনই এই ঘটনা ঘটে। আসলে তখন সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন ছিল না।’